সিজারিয়ান অপারেশন বেসরকারি ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালের বিজনেস । কোনো প্রসূতি মাতার নরমাল ডেলিভারী সম্ভাবনা থাকলেও তাকে সিজার করতে বলায়। একজন প্রসূতি মাতা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকেন। সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে ব্রোকাররা বলেন, এখানে ভালো অপারেশন হয় না। তারা যে কোনো বেসরকারি ক্লিনিক কাম হসপাতালের কথা বলেন। প্রসূতি মাতার সাথে থাকা স্বামী-স্বজনরা থাকেন দিশেহারা আর এই সুযোগের ব্যবহার করা হয়। নরমাল ডেলিভারীতে বেসরকারি ক্লিনিক কাম হাসপাতালের তেমন কোনো বড় অংকের আয় হয় না, তাই সিজার। এই রকম সিজার করতে গিয়ে অনেক ক্লিনিকে প্রসূতি মাতার মৃত্যু, গর্ভজাত শিশুর মৃত্যু ঘটে থাকে। গ্রামের অসহায় মানুষদের কখনও ভয়-ভীতি ,কখনও অর্থ দিয়ে মুত্যুর সাথে মিমাংসা করা হয়। পাবনায় এই অবস্থা চলে আসছে। অলিতে-গলিতে নামী-বেনামী বহু ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। এরা মানুষ নিয়ে বাণিজ্য করেন।
সিজার করতে গিয়ে প্রসূতি মাতার ইউরিনারি ব্লাডার কেটে ফেলেছেন চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ওই প্রসূতি মাতা। তাকে সুস্থ করতে এক মাস ধরে হাসপাতালগুলোতে ছুটছেন তাঁর দরিদ্র স্বামী। গত ২১ আগস্ট পাবনার আমিনপুর থানাধীন কাশীনাথপুরের সেবা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী প্রসূতি মাতা মোহরা খাতুন সুজানগর উপজেলার রানীনগরের দরিদ্র ভ্যান চালক ইশারত আলীর স্ত্রী।
‘ইশারত আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমার সন্তান সম্ভবা স্ত্রীকে সেবা হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নরমাল ডেলিভারি সম্ভব নয়। তাই সিজার করার চুক্তি করি। অপারেশনের সময় আমার স্ত্রীর ইউরিনারী ব্লাডার কেটে ফেলেন চিকিৎসক। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ঐ দিনই তাকে ১৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্ত্রীকে নিয়ে ২৫ আগস্ট রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে তার ইউরিনারী ব্লাডারের অপারেশন হয়। ৩ সেপ্টেম্বর আমার স্ত্রীকে বাড়ী নিয়ে এসেছি। এক মাস পর আবার যেতে হবে।
ভ্যান চালক ইশারত আলী বলেন, সেবা হাসপাতালে ঐ চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে বিভিন্ন এনজিও-ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি। এখনও চিকিৎসা চলছে, কতদিন লাগবে জানি না।’
কাশীনাথপুর সেবা হাসপাতালের ইনচার্জ আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না।’
পাবনার সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল-এর সাথে আজ রবিবার মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঐ প্রসূতি মাতার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন