আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতাধর দেশ সউদী আরব প্রতি বছর গোপনে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে যাচ্ছে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে নর্দার্ন কেন্টাকির মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বছরে ১ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিচ্ছে সউদী প্রশাসন।
গত বছরের বসন্তে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রে সফরে গেলে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউটের বাইরে অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সউদী আরবের নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। সউদী ইয়েমেনে নিরীহ মানুষের ওপর বোমাবর্ষণ করে একদিকে আর অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৬২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থসহায়তা দেয়। ২০১৭ সালে সউদী রাজতন্ত্র যখন বিন সালমানকে যুবরাজ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফরে ছিলেন। ওই সময়ই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্থসহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সউদী আরবের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই ব্যবসা করে আসছে। বিশেষায়িত গবেষণার জন্য সউদী তেল কোম্পানির আরামকো ও অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ওই অর্থ দেওয়া হয়। এমআইটির পরীক্ষাগারে গবেষণার জন্য বার্ষিক বাজেট ৭৫ মিলিয়ন ডলার। এই অর্থ আসে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে। গবেষণায় অর্থদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশীদার হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতি অংশীদারকে বছরে আড়াই লাখ ডলার দিতে হয়। সউদী যুবরাজের ব্যক্তিগত ফাউন্ডেশন এমআইটির পরীক্ষাগারে ৯০টি পৃথক অংশীদারত্ব আছে। ফলে বছরে শুধু এই পরীক্ষাগারেই সউদী আরব ২৩ মিলিয়ন ডলার দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের আয়কর বিভাগের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, হার্ভার্ড, ইয়েল, নর্থ ওয়েস্টার্ন, স্ট্যানফোর্ড, ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। এর মধ্যে সউদী আরব থেকেই আসে সিংহভাগ। বিশ্বের ৪১তম জনবহুল দেশ সউদী আরবের মাত্র ৪৪ হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার পর সউদীর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে অর্থ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, আমেরিকার কলেজগুলো অন্য সব দেশের শিক্ষার্থীর তুলনায় সউদীদের কাছ থেকে অধিক হারে বেতন নেয়। ২০১৮ সালে ইস্টার্ন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আয়ের ১২ শতাংশই আসে শুধু সউদী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন