আশিক বন্ধু : একজন মিউজিশিয়ান হিসেবে সুমন কল্যাণের যাত্রা ’৮৯ সালে। সিটি বয়েজ, সফট টাচ ব্যান্ড, স্পার্ক, স্টিলার, ফিলিংস ও সোলস ব্যান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন দীর্ঘদিন। তারপর একজন গায়ক ও সংগীত পরিচালক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। সুমন কল্যাণের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় বিনোদন প্রতিদিনের।
বিষয়ভিত্তিক গানে আপানাকে বেশি পাওয়া যায়। এর কারণ কি?
বরাবরই আমি একটু ভিন্ন ধারায় চলি। বিষয়ভিক্তিক, জীবনমুখী গানে নিজেকে খুঁজে পাই। আমার প্রশান্তির জায়গা এখানে। এই ভাবনা থেকেই গেয়েছি আজম খানকে নিয়ে গুরু, মান্না দে কে নিয়ে পুরনো, রমা চৌধুরীকে নিয়ে বীরাঙ্গনা, সুচিত্রা সেনকে নিয়ে রূপালী গান, সাভার ট্র্যাজেডি নিয়ে শাহিনাসহ অনেক গান। সম্প্রতি তৈরি করলাম কবি নির্মলেন্দু গুণকে নিয়ে একটি গান। শিগগিরই গানটি প্রকাশিত হবে। বলা যায়, সমসাময়িক এবং ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে গান করতে আমার ভলো লাগে।
অনেক তারকা শিল্পীর সাথে কাজ করেছেন। এ অভিজ্ঞতাটা কেমন?
প্রতিষ্ঠিত অনেকের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তারা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। এর ফলে গানগুলোও শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। তাদের সহযোগিতা না পেলে হয়তো গানগুলো করতে পারতাম না। এখনো সেসব গানের ভাল প্রতিক্রিয়া পাই। যেমন আমার সুর সঙ্গীতে কুমার বিশ^জিতের কণ্ঠে আমি তোমার জন্য, মেঘলা মেয়ে, ফাহমিদা নবীর কণ্ঠে ভালোবাসি তাই, সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে ঝড় ও বাদল, বাপ্পা মজুমদারের কণ্ঠে প্রজাপতি পথে, আলম আরা মিনুর কণ্ঠে দখিনের জানালা, কুমার বিশ^জিৎ ও সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে সালাম বাংলাদেশ গানগুলো আমার সঙ্গীত জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে। এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।
আপনার সঙ্গীত পরিচালনায় নতুন গান বা অ্যালবামের কি খবর?
এরইমধ্যে পাপপূণ্য অ্যালবামটি আমার সুর সঙ্গীতে সিএমভির ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ডুয়েট অ্যালবাম। গেয়েছেন রিংকু ও কাজী শুভ। এখানে লালন, রাধা রমন, হাসান রাজা, শাহ আব্দুল করীম, ভবা পাগলার কিছু জীবনমুখী গানের নতুন সুর সংগীতায়োজন করেছি। এছাড়া আরেকটি অ্যালবাম এসেছে। বেঁচে থাকার গান। গানবাজের ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে। এতে গেয়েছেন বাপ্পা মজুমদার, দিনাত জাহান মুন্নী, পান্থ কানাই, ঐশীসহ অনেকে। আরো কিছু কাজ করছি ভালোবাসা দিবস ও বৈশাখ উপলক্ষে।
আপনার নিজের গাওয়া নতুন অ্যালবাম কবে আসবে?
আমি সময় বেধে কাজ করি না। মনের ভেতর থেকে না আসলে, জোর করে গান করি না। আমার কণ্ঠে দুটি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে, ২০১২তে নাগরিক আকাশ অ্যালবামিট প্রকাশিত হয়। তারপর ২য় একক গানের ক্রীতদাস লেজার ভিশন থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। নতুন অ্যালবামের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করছি। তবে এটা নির্ভর করছে নিজের মর্জির ওপর।
একজন মিউজিশিয়ান হিসেবে আপনার ক্যারিয়ার শুরু। এখন কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। কোন পরিচয়টি আপনার কাছে মুখ্য?
এখনো নিজেকে মিউজিশিয়ান ভাবতে ভালো লাগে। বাজিয়ে বা কোনো মিউজিক সৃষ্টি করেই আমার আনন্দ। আর গানের মাধ্যমে নিজের কিছু স্বপ্ন, জীবনের চিন্তা, অনুভূতি, সমাজ ও বাস্তবতার গল্প কণ্ঠে তুলে ধরি। সব নিয়েই তো গানের সংসার। একটার সাথে অন্যটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অন্যদিকে সঙ্গীত পরিচালনা বর্তমানে জীবন জীবিকার জন্য পেশায় পরিণত হয়েছে।
গান নিয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনা কি?
আমার শুরুটা চট্টগ্রাম শহরে। ব্যান্ড মিউজিক দিয়ে ৮৯ সালে যাত্রা শুরু। প্রথম ব্যান্ড ছিল সিটি বয়েজ, তারপর সফট টাচ, স্পার্ক, স্টিলার। সব ছেড়ে একসময় নিজের একক প্রচেষ্টায় দল করেছিলাম। আবার ’৯৬ সালে ফিলিংস ব্যান্ডে বাজিয়েছিলাম। ’৯৮ সালে সোলস ব্যান্ডে কিছুদিন ছিলাম। দীর্ঘ সময় কেটেছে বিভিন্ন ব্যান্ডে একজন মিউজিশিয়ান হিসেবে। আমি মনে প্রাণে একজন মিউজিশিয়ান। অনেক সাধনা করে, ধৈর্য্য ধরে এখনো কাজ করছি। এভাবেই গানের সংসারে থাকতে চাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন