মৃত্যুর দুয়ার থেকে উদ্ধার করে নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ায় বাংলাদেশ এবং এ দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন ভারতীয় জেলে রবীন্দ্রনাথ দাস ওরফে কানু দাস। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ দেশের হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তরের সময় তিনি তাকে উদ্ধারকারী বাংলাদেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কানু দাস বলেন, উত্তাল সাগরে মাছের খাবার হচ্ছিলাম, বেঁচে থাকার সব আশা যখন ছেড়েই দিয়েছিলাম তখনই দেবদূতের মতো তারা হাজির হয়ে আমাকে তুলে আনলেন।
উত্তাল সাগরে ট্রলার ডুবে যাওয়ার পর বাঁশ ধরে ভাসছিলেন কানু। সাথে ছিলেন আরও ১৫ জন মানুষ। তিনি ছাড়া সবার লাইফ জ্যাকেট ছিল। তবুও একে একে তলিয়ে যাচ্ছিলেন সবাই। সব শেষে ছিলেন তিনি আর তার ভাইপো। তাকে উদ্ধারের ৩ ঘণ্টা আগে ভাইপো তলিয়ে যায় উত্তাল সাগরে। বেশ কয়েকদিন সাগরে উত্তাল ঢেউয়ের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, যখন বৃষ্টি হতো হা করে বৃষ্টির পানি পান করতাম। কিন্তু মাছ আমার বাহুতে, ঘাড়ে কামড়াচ্ছিলো। দিন রাত কখনো ঘুমাইনি। বাবা, মা, ছেলে আর মেয়ের মুখটি ভেসে উঠছিলো। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বৈরী আবহাওয়া ট্রলার ডুবির শিকার হন কানু দাস ও তার সঙ্গিরা।
বুধবার বেলা পৌনে একটায় কুতুবদিয়া থেকে ওই জেলেকে উদ্ধার করে কেএসআরএম গ্রæপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং লিমিটেডের জাহাজ এমভি জাওয়াদ। কানু দাস ওই জাহাজের নাবিক কেএসআরএম, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞ বলে জানান। গতকাল পতেঙ্গার বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি জেটিতে উদ্ধার করা জেলেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি করা হয়। পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়–য়া জানান, সেখানে তাকে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। তারা তাকে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নৌবাণিজ্য দফতরের প্রধান কর্মকর্তা ড. সাজিদ হোসেন, কেএসআরএমের সিইও প্রকৗশলী মেহেরুল করিম, এমভি জাওয়াদের ক্যাপ্টেন এসএম নাসির উদ্দিন, মাস্টার পুলক কুমার ভাস্কর, মেরিন সুপার ওসমান গনি, ডিপিএ-সিএসএ ফয়েজ আহমদ জুকব, ডা. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন