বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শ্রেষ্ঠ রাজনীতিক হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত ও বরিত। রাজনীতিবিদের বাইরে তার অন্য কোনো পরিচয়ের কথা আগে কারো জানা ছিল না। কিন্তু ২০১২ সালে তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গেল যে তিনি একজন চমৎকার লেখকও বটে। গুণী পাঠক মাত্রেই স্বীকার করেন যে তাঁর এ গ্রন্থটি একাধারে তাঁর জীবন কথা, এদেশের রাজনীতি ও জাতীয় ইতিহাসের এক বিশ্বস্ত ও প্রামাণ্য দলিল।
এ গ্রন্থে নানাবিধ বিষয় নিয়ে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন। তার মধ্যে একটি আকর্ষণীয় অংশ হচ্ছে তার ভ্রমণ বিররণ। ১৯৫২ সালে চীনে শান্তি সম্মেলনে আমন্ত্রণপ্রাপ্ত হয়ে আরো কয়েকজনের সাথে তাঁর চীন ভ্রমণের সুযোগ আসে। সেটাই তাঁর জীবনের প্রথম বিদেশ ভ্রমণ। এ ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে বিবরণ তিনি দিয়েছেন তা অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক।
বঙ্গবন্ধুর ভাষ্য থেকে জানা যায়, সদ্য স্বাধীন চীনের রাজধানী পিকিংয়ে ১৯৫২ সালের ২ থেকে ১২ অক্টোবর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক রিম পিস কনফারেন্স বা শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাকিস্তান থেকে মোট ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তার মধ্যে পূর্ব বাংলার (১৯৫৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান নামকরণ করা হয়) ভাগে পড়েছিল ৫ জন। তারা ছিলেনঃ আতাউর রহমান খান, ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন, খন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস, উর্দু লেখক ইবনে হাসান ও শেখ মুজিবুর রহমান।
নানা সমস্যা ও প্রতিক‚লতা এড়িয়ে তাদের বিমানযাত্রা শুরু হয় ২৫ সেপ্টেম্বর। যাত্রাপথ এ রকম - ঢাকা থেকে রেঙ্গুন। সেখানে বেশ কয়েক ঘন্টা বিরতি। সেখান থেকে ব্যাংকক হয়ে হংকং। তারপর ট্রেনে ক্যান্টন এবং সেখান থেকে বিমানে পিকিং (হালে বেইজিং)।
প্রতিনিধিদল রেঙ্গুন পৌঁছে বিকালে। বিকাল ও রাত তাদের রেঙ্গুনে থাকতে হয়। বঙ্গবন্ধু সমকালীন বার্মার পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর প্রথম পর্যবেক্ষণে মন্তব্য করেছেনঃ ‘ ব্রহ্মদেশ ও বাংলাদেশ একই রকমে ফুলে ফুলে ভরা। ব্রহ্মদেশে তখন ভীষণ গোলমাল, স্বাধীনতা পেলেও জারিদিকে অরাজকতা। ....গৃহযুদ্ধে দেশটা শেষ হতে চলেছে। আইনশৃঙ্খলা বলে কোন জিনিস নাই। যে কোনও সময় এমনকি দিনের বেলায়ও রেঙ্গুন শহরে রাহাজানি ও ডাকাতি হয়। সন্ধ্যার পরে সাধারণত মানুষ ভয়েতে ঘর থেকে বের হয় না।’
ব্যাংককে পৌঁছলেন। তিনি লিখেছেনঃ ‘ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক। খুব বড় এয়ারপোর্ট তাদের।’
সেদিনই তারা পৌঁছেন হংকং। হংকং তখনো ব্রিটিশ শাসনে। প্রায় পাখির চোখে বঙ্গবন্ধুর হংকং দেখা। তিনি জানিয়েছেন, ‘রাতে ও দিনে হংকং ঘুরে দেখলাম। হংকংয়ের নাম ইংরেজেরা রেখেছে ভিক্টোরিয়া। নগীর এক পাড়ে হংকং, অন্য পাড়ে কৌলুন। ... জিনিসপত্র খুব সস্তা। তবে সাবধান হয়ে কিনতে হবে। --- জানা শোনা পুরানা লোকের সাহায্য ছাড়া মালপত্র কেনা উচিত না। হংকংয়ের আরেকটা নাম হওয়া উচিত ছিল ‘ঠগিবাজ শহর।’ রাস্তায় হাঁটবেন পকেটে হাত দিয়ে, নাহলে পকেট খালি। এত সুন্দর শহর, তার ভিতরের রূপটা চিন্তা করলে শিউড়ে উঠতে হয়। .... পরে অনেকবার হংকংয়ে যেতে হয়েছে এবং ককেদিন থাকতেও হয়েছে। হংকং এত পাপ সহ্য করে কেমন করে, শুধু তাই ভাবি।’ কয়েক লাইনের মধ্যে পঞ্চাশ দশকের শুরুর দিকের হংকংয়ের সামগ্রিক এ রূপ বর্ণনার জন্য লেখককে তারিফ করতে হয়।
হংকং থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁরা গেলেন ট্রেনে ক্যান্টন। তিনি লিখেছেনঃ আমাদের জন্য ট্রেনে খাবার ও থাকার সুবন্দোবস্ত করা হয়েছে। ... আমি ট্রেনের ভিতর ঘুরতে শুরু করলাম। ট্রেনের এ পাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত যাওয়া যায়। নতুন চীনের লোকের চেহারা দেখতে চাই। ‘আফিং’ খাওয়া জাত যেন হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে উঠেছে। ... মনে হল, এ এক নতুন দেশ, নতুন মানুষ। এদের মনে আশা এসেছে, হতাশা আর নাই। তারা আজ স্বাধীন হয়ে?েছ, সকল কিছুই আজ জনগণের। ভাবলাম, তিন বছরের মধ্যে এত বড় আলোড়ন সৃষ্টি তারা কি করে করল!’
সন্ধ্যার পর ক্যান্টনে পৌঁছেন তাাঁরা। বঙ্গবন্ধু লিখেছেনঃ ‘ ক্যান্টন প্রদেশ বাংলাদেশের মতই সুজলা সুফলা। শত শত বছর বিদেশীরা এ দেশকে শোষণ করেও এর সম্পদের শেষ করতে পারে নাই।’
পরদিন সকালে বিমানে পিকিং রওনা হলেন সবাই। ক্যান্টন থেকে পিকিং দেড় হাজার মাইল পথ। তিনি দিনের বেলা প্লেনে এই পথ চীনের ভ‚খন্ডের উপর দিয়ে উড়ে যাবার সময় সেদেশের সৌন্দর্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ হন।
শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম পিকিং দর্শনের অভিজ্ঞতা মুগ্ধ করার মত। তিনি লিখেছেনঃ ‘ এই সেই পিকিং, চীনের রাজধানী। পূর্বে অনেক জাতি পিকিং দখল করেছে। ইংরেজ বা জাপান অনেক কিছু ধ¦ংসও করেছে। অনেক লুটপাট করেছে দখল করার সময়। এখন সমসÍ শহর যেন নতুন রূপ ধরেছে। পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়ে প্রাণ ভরে হাসছে।’
শান্তি সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা ২ অক্টোবর থেকে। তাই হাতে দু তিনদিন সময় পেয়ে বঙ্গবন্ধু পিকিং শহর একটু ঘুরে দেখেন। তাঁর চোখে পাঠকরা দেখতে পান যে পিকিং শহরের ভিতরেই আরেকটা শহর আছে যার নাম ‘ফরবিডেন সিটি।’ চীনের সম্রাটরা আগে অমাত্যদের নিয়ে এ শহরে থাকতেন। সাধারণ লোকের এর ভিতরে ঢোকার অনুমতি ছিল না। কি নেই সে শহরে! পার্ক, লেক, প্রাসাদ সবকিছুই আছে সেখানে। বঙ্গবন্ধু বলেন, তিনি ভারতে লালকেল্লা, ফতেহপুর সিক্রি ও আগ্রা কেল্লাও দেখেছেন। ফরবিডেন সিটিকে এসবের চেয়েও বড় মনে হয়েছে তাঁর।
এখানে তাঁর একটি পর্যবেক্ষণ উল্লেখের দাবি রাখে যা তাঁকে গণমানুষের নেতা হিসেবই চিহ্নিত করে। এ শহর দেখার পর তিনি লিখেছেনঃ ‘দেখলাম ও ভাবলাম, রাজ-রাজড়ার কান্ড সব দেশেই একই রকম ছিল। জনগণের টাকা তাদের আরাম-আয়েশের জন্য ব্যয় করতেন, কোন বাধা ছিল না।’
পরদিন তিনি ইংরেজিতে যাকে ‘সামার প্যালেস’ বলা হয় সেই গ্রীষ্ম প্রাসাদ দেখতে যান। সেখানে নানা রকমের জীব-জানোয়ারের মূর্তি, বিরাট বৌদ্ধমন্দির, ভিতরে বিরাট লেক, লেকের মধ্যে একটি দ্বীপ রয়েছে। তিনি বলেছেন, এটাকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রমোদ নগরী বলা চলে।
পিকিংয়ে থাকাকালে চীন সম্পর্কে , দেশটির পরিস্থিতি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু যা শুনতে পান, যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তা এ রকমঃ ‘ কালোবাজার বন্ধ, জনগণ কাজ পাচ্ছে। চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি বন্ধ হয়ে গেছে। কঠোর হাতে সরকার এইসব দমন করেছে। যে কোন জিনিস কিনতে যান, এক দাম। আমি একাকী বাজারে সামান্য জিনিসপত্র কিনেছি। দাম লেখা আছে। কোনো দরকষাকষি নাই। রিকশায় চড়েছি। কথা বুঝতে পারি না। চীনা টাকা যাকে ‘ইয়েন’ বলে, হাতে করে বলেছি , ‘‘ভাড়া নিয়ে নাও কত নেবা।’’ তবে যা ভাড়া তাই নিয়েছে, একটুও বেশি নেয় নাই।’
চীনে পরিস্থিতির যে কতটা পরিবর্তন ঘটেছিল তার আরেকটি উদাহরণ বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন। সে সময় চীনে পাকিস্তান দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারি ছিলেন এক সময়ে ল’-এ তার সহপাঠি মাহাবুব। পিকিংয়ে তার সাথে দেখা হয় বঙ্গবন্ধুর। পরে বেগম মাহাবুব তাঁকে একটি ঘটনার কথা জানান। তাহলঃ একদিন তিনি স্কুল থেকে আসছিলেন রিকশায়, কিন্তু তার কলম পড়ে গিয়েছিল রিকশায়। বাড়ি এসে খোঁজাখুঁজি করে কলম পেলেন না। তখন ভাবলেন, রিকশায় পড়ে গেছে, তা আর পাওয়া যাবে না। পরের দিন রিকশাওয়ালা এসে তার কলম ফেরত দিয়ে যায়। তিনি বঙ্গবন্ধুকে জানান, এ রকম অনেক কিছুই আজকাল ঘটছে।
পিকিং শান্তি সম্মেলনে ৩৭টি দেশের ৩৭৮ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। বক্তৃতা পর্ব শুরু হল। পাকিস্তানের পক্ষে অনেকেই বক্তৃতা করেন। পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষ থেকে খান আতাউর রহমান ও শেখ মুজিবুর রহমান বক্তৃতা করেন। তবে কথা সেটা নয়। শেখ মুজিব সেই ১৯৫২ সালেই পিকিং শান্তি সম্মেলনে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করেন। তিনি লিখেছেনঃ ‘আমি বাংলায় বক্তৃতা করলাম। ... কেন বাংলায় বক্তৃতা করব না? ভারত থেমে মনোজ বসু (সাহিত্যিক) বাংলায় বক্তৃতা করেছেন। পূর্ব বাংলার ছাত্ররা জীবন দিয়েছে মাতৃভাষার জন্য। বাংলা পাকিস্তানের সংখ্যাগুরু লোকের ভাষা। ... আমি ইংরেজিতে বক্তৃতা করতে পারি। তবু আমার মাতৃভাষায় বলা কর্তব্য।’
শান্তি সম্মেলন শেষ হওয়ার পর সেখানে এক জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা জনসভায় যোগ দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মুসলমানদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘চীনে কনফুসিয়ান ধর্মের লোকেরা সংখ্যায় বেশি। তারপর বৌদ্ধ, মুসলমানের সংখ্যাও কম নয়, কিছু খ্রিস্টানও আছে। একটি মসজিদে গিয়েছিলাম, তারা বললেন, ধর্মেকর্মে বাধা দেয় না এবং সাহায্যও করে না।
এ সম্মেলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছেন। তাহল কাশ§ীর প্রসঙ্গ। সবারই জানা যে উপমহাদেশ স্বাধীন হওয়ার সময় থেকেই কাশ্মীর এক অমীমাংসিত রক্তক্ষয়ী সমস্যা হয়ে আছে। বিগত ৭২ বছরেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। যাহোক, পিকিং শান্তি সম্মেলনে এ বিষয়টি গুরুত্ব পায়। বঙ্গবন্ধু লিখেছেনঃ ‘ভারতবর্ষের প্রতিনিধিদের ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে অনেক আলোচনা হওয়ার পরে একট যুক্ত বিবৃতি দেয়া হয়েছিল। তাতে ভারতের প্রতিনিধিরা স্বীকার করেছিলেন, গণভোটের মাধ্যমে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’ তবে আমরা জানি, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান আজো হয়নি। বরং সর্বশেষ যা ঘটেছে তা হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ৫ আগস্ট ২০১৯ কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দু ভাগ করেছে। কাশ্মীর এখন পুরোপুরি ভারতের অংশ।
দেশে ফেরার আগে শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াসসহ বেশ কয়েকজন চীনের কয়েকটি জায়গা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেন। তদনুযায়ী তাঁরা প্রথমে যান সমুদ্র বন্দর তিয়েন শিং-এ। সেখানে একজন ইমাম ও আরো কয়েকজন মুসলমানের সাথে তাঁদের দেখা হয়। তারাও পিকিংয়ের মুসলমানদের মত একই কথা জানান যে তারা সুখেই আছেন। কমিউনিস্ট সরকার ধর্ম-কর্মে বাধা দেয় না, তবে ধর্ম প্রচার করা চলে না।
তিয়েন শিং থেকে তাঁরা যান নানকিং। এটিও বহু পুরনো নগরী, শিল্প এলাকা ও সামুদ্রিক বন্দর। সেখানে চীনের বিপ্লবী নেতা সান ইয়েৎ সেনের সমাধিতে তাঁরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকে যান বিশে^র অন্যতম শ্রেষ্ঠ শহর ও ব্যবসা কেন্দ্র বন্দর নগরী সাংহাইয়ে। তারপর চীনের কাশ্মীর নামে পরিচিত হ্যাংচৌয়ে যান। সবুজ শ্যামল হ্যাংচৌকে দেখে পূর্ববাংলা বলে মনে হয়েছে তাঁর। হ্যাংচৌ থেকে তাঁরা ক্যান্টনে পিরে আসেন। এবার তিনি ক্যান্টনের মানুষকে ভালোভাবে দেখার সুযোগ পান। লিখেছেনঃ ‘চীন দেশের লোকের মধ্যে দেখলাম নতুন চেতনা। চোখে মুখে নতুন ভাব ও নতুন আশায় ভরা।’
ক্যান্টন থেকে আবার হংকং। তিনি লিখেছেনঃ ‘ মাও সে তুং-এর সরকারকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ইতিহাস বিখ্যাত চীন দেশ থেকে বিদায় নিলাম।’ তারপর হংকং থেকে বিমানে করে দেশে ফেরা। পাঠকদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ ‘ বিদেশে না গেলে নিজের দেশকে ভালভাবে চেনা কষ্টকর।’
আমাদের রাজনীতিকদের মধ্যে বহুজনই হরহামেশা বিদেশ ভ্রমণ করেন। কিন্তু কজন বঙ্গবন্ধুর উচ্চারিত এ এ সত্যটি হৃদয়ঙ্গম করেন, তা বলা কঠিন। (সূত্রঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃঃ ২২১-২৩৪)
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন