বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুমিল্লার প্রতিটি স্ট্যান্ডে উপচে পড়া ভিড়

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

গ্রামের বাড়িতে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে রাজধানী ঢাকা কিংবা বাণিজ্যিক শহর চট্টগ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। গতকাল শনিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কয়েকটি বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের ছুটি কাটিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ঈদ যাত্রীরা বাসস্ট্যান্ডগুলেতে ভিড় করছেন।

নানা ভোগান্তি ছাপিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি গেলেও প্রিয়জনদের ছেড়ে কর্মস্থলে ফিরতে যেন মন চায় না বাড়ি ফেরা মানুষগুলোর। তবুও কাজের খাতিরে আসতে হচ্ছে। ঈদ শেষে গতকাল শনিবার কর্মস্থলে ও বাসাবাড়িতে ফেরার জন্য শহরমুখী মানুষদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিটি বাস বাসস্ট্যান্ডে। এ সময় ঈদযাত্রীদের বাসের জন্য দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে।

কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে আসা কামরুল বলেন, অনেক কষ্ট করে কুমিল্লার ক্যন্টনমেন্ট বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকার একটি বাসে উঠতে হয়েছে। বাসে উঠে সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ঢাকা ফিরতে হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। কয়েকটা দিন অনেক ভালো কেটেছে। গ্রামে খাওয়া-দাওয়া ও চলাফেরা অনেক শান্তি। যার জন্য আসতেই মন চাচ্ছিল না অশান্তির এই শহরে।
কিন্তু কাজের খাতিরে ফিরতে হচ্ছে। কুমিল্লার চান্দিনা থেকে আসা যাত্রী শাহআলমগীর খান জানান, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি ফার্মে চাকরি করেন। স্ত্রী-সন্তানসহ ৬ জন মিলে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে এসেছিলেন। তিনি চলে এসেছেন, এক সপ্তাহ পর স্ত্রী-সন্তানরা ঢাকায় যাবেন। স্ত্রী-সন্তানরাও বেশ খুশি। গ্রামের বাড়িতে সবাই মিলে আনন্দ করে ঈদ করতে পেরে।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, বাসের প্রতিটি ট্রিপে আসন পূর্ণ হয়ে যাত্রী আসছেন। সিট না পেয়ে অনেকেই ভেতরে দাঁড়িয়ে কোনোভাবে ঢাকায় আসছেন। বেশিরভাগ বাস অনেকটা ফাঁকা অবস্থায় ফিরতি যাত্রী বহনের জন্য বিভিন্ন গন্তব্যে চলে যাচ্ছে। এতে করে দ্বিগুণ হারে ভাড়া নিচ্ছে যাত্রীদের থেকে। এমন অভিযোগ শুধুমাত্র বাসের ক্ষেত্রে। বাস মালিকরা বলছেন, খালি গাড়ি নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরতে হচ্ছে। তাই আসা যাওয়ার ভাড়া নিতে হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের পুরোটাই যাত্রীদের চাপ থাকবে। এরপর থেকে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক হবে।

কুমিল্লার লাকসাম থেকে আসা জানেআলম বলেন, লম্বা ছুটি পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বৃদ্ধ মা-বাবার সঙ্গে আনন্দেই ঈদ করেছি। তিনি বলেন, বাসে ভিড় দেখে মনে হয়েছে আজ না এলে আরও বিপদে পড়তে হতো। সামনে ভিড় আরও বাড়বে এমন আশঙ্কায় একদিন আগেই ঢাকায় যাচ্ছি। কুমিল্লার শাসনগাছা বাস টার্মিনালে বাসচালক তমিজ উদ্দিন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির চাপ রয়েছে। তবে বড় ধরনের যানজটের দেখা মেলেনি। অনেকেই ছুটি নিয়ে গ্রামে অবস্থান করছেন।

এছাড়া গার্মেন্টসহ শিল্প-কারখানাগুলো আরও দু’একদিন পরে খুলবে। এ কারণে সপ্তাহজুড়ে যাত্রী চাপ থাকবে। ঢাকামুখী যাত্রী চাপ থাকায় বাসগুলো ফাঁকা অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ^রোড থেকে আসা কামরুল বলেন, রবিবার অফিসে যোগ দিতে সকালে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা করেছেন। তিনি বলেন, আসার পথেও গাড়ির টিকিট সঙ্কট রয়েছে।

  • সাধারণ সময়ের তুলনায় ভাড়াও ৫০-১০০ টাকা বেশি আদায় করছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই। তবে বাসচালক ও মালিকরা বলছেন, সর্বত্রই বোনাসের ব্যাপার আছে এখানে ৫০ টাকা বেশিকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখা উচিত না। এদিকে একইভাবে যাত্রীদের ভিড় ছিল কুমিল্লা রেল স্টেশনে। কুমিল্লার রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ট্রেন এসে থামার সঙ্গে সঙ্গে মানুষে ভরে যায় স্টেশন প্ল্যাটফর্ম। দাঁড়িয়ে, ছাদে, সিটে বসে যে যেভাবে পারছে মানুষ ফিরছে। তবে অনেকে এখন কাজের খাতিরে চলে আসছেন স্ত্রী-সন্তানদের রেখে। যাত্রীর এই চাপ বুধবার পর্যন্ত থাকবে বলে জানান স্টেশন ম্যানেজার। তিনি বলেন, ট্রেন যথাসময়ে এসে পৌঁছাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি। এটা সম্ভব হয়েছে সবাই একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার কারণে। এ ছাড়া যাত্রীদেরও তেমন কোনো অভিযোগ নেই। গতকালের চেয়ে আজকে যাত্রী চাপ একটু বেশি। সব মিলিয়ে যাত্রীরা নির্বিঘে্ন ফিরে আসতে পারছে এটাই বড় বিষয়। চট্টগ্রাম থেকে আসা তানভির বলেন, সময়মতো ট্রেন ছাড়লেও অনেক যাত্রী তাদের নিজেদের সিটে বসতে পারেনি। একজনের সিট অন্যজন দখল করে ফেলেছে। ফলে অনেককেই গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আসতে হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনের মধ্যে হকারের উৎপাতও বেশি বলে জানান তিনি।
 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন