শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনোদন প্রতিদিন

চলচ্চিত্র থেকে কি অপু বিশ্বাস বিদায় নিলেন?

প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ডিলান হাসান : এই কথা চলচ্চিত্রের লোকজন এবং বিনোদন সাংবাদিকবৃন্দ অসংখ্যবার বলিয়াছিলেন শাকিব নির্ভর হওয়া অপু বিশ্বাসের মোটেও উচিত হইতেছে না। বড় পর্দায় একাধিক জনের সঙ্গে সংসার করিতে হয়। একজনের সঙ্গে সংসার পাতিয়া বসিয়া থাকা নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছু নহে। কে শোনে কাহার কথা! অপু তাহার সিদ্ধান্তে অটল থাকিয়া এক শাকিবের সঙ্গেই পর্দায় সংসার পাতিয়া বসিয়া রইলেন। উপরন্তু যুক্তি দেখাইতেছিলেন, শাকিবের সহিত তাহার জুটি দর্শক পছন্দ করিয়াছে বলিয়াই অন্য কাহারও সঙ্গে জড়াইবার বিন্দুমাত্র অভিলাষ নাই। তাহার এ কথা শুনিয়া তখনই বলিয়াছিলাম, এই নায়িকাটি নিজের বিপদ নিজেই ডাকিয়া আনিতেছে। শাকিব এমনই এক চিজ স্বরূপ জিনিস, যে কোনো সময় অপুকে ছাড়িয়া অন্য কাহারো সঙ্গে জুটি গড়িতে পারেন। এর ফল হইবে এইরূপ, অপু বিশ্বাস তার বিশ্বাস হারাইয়া চলচ্চিত্র নামক অতি পিছল পথ হইতে ¯িøপ কাটিয়া অতল গহŸরে পড়িয়া যাইবেন। চলচ্চিত্র এমনই যে এখানে কেহ কাহারো নয়। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের সাফল্যের স্বার্থে একে অপরের সাথে জানিয়া-বুঝিয়া কাজ করিয়া থাকেন। এই দিক হইতে বোধকরি অপু বিশ্বাস একটু নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়াছেন। হয়তো ভাবিয়াছিলেন শাকিব কখনোই তাহার সহিত এমন আচরণ করিবে না। হয়তো এমনও ভাবিয়াছিলেন, যতদিন শাকিবের সহিত পর্দায় ঘর বাঁধিয়া থাকা যায়, ততদিনই ভাল। শাকিবকে উসিলা ধরিয়া পয়সা-কড়ি কামাইয়া লই। তাহার এই আকাক্সক্ষাই যে একদিন তাহার ক্যারিয়ারে শনির দশা হইয়া উঠিবে, ইহা বেমালুম ভুলিয়া গিয়াছিলেন। সেই সময় তাহার এই অভিলাষ সঠিক হইলেও সময় যে ঐরূপ থাকিবে না, ইহা সম্ভবত অপু বিশ্বাস বুঝিতে ভুল করিয়াছিলেন। যাহাই হউক, শাকিবের সঙ্গী হইয়া চলচ্চিত্রে ঘর করিতে গিয়া উহাদের মধ্যে মাঝে মাধ্যেই মান-অভিমান ও ঝগড়া-ঝাটি লাগিয়া যাইত। শেষ অবধি অপু নিজেই উদ্যোগী হইয়া অভিমান ভাঙ্গিতেন। অপুর ইহা ছাড়া আর গতিও ছিল না। ইহার কারণ শাকিব বাঁকিয়া বসিলে অপুরই বিশেষ ক্ষতি হইয়া দাঁড়াইবে। এমনকি তাহার অস্তিত্ব লইয়াই টান দিবে। এ কথা সকলেই জানিতেন, অপু বিশ্বাসের ক্যারিয়ারখানি কচুরিপানার মতোই ভাসিয়া চলিয়াছে। অনেকটা পরগাছা হইয়া শাকিব নামক বৃক্ষটিকে জড়াইয়া রহিয়াছেন। একদিন না একদিন বৃক্ষ যখন সরিয়া যাইবে, তখন তাহা মুহূর্তেই শেকড়-বাকড়হীন হইয়া মুখ থুবড়াইয়া পড়িবে। সেই দিনটি বোধ হয় অপু বিশ্বাসের আসিয়া পড়িয়াছে। তাহার অস্তিত্বই এখন বিলীন হইবার উপক্রম হইয়াছে। ইদানিং চলচ্চিত্রের কোথাও তাহার কোনো চিহ্ন খুঁজিয়া পাওয়া যাইতেছে না। ইহাতে এই ধারণাই বদ্ধমূল হইয়া উঠিয়াছে, অপু বিশ্বাস যে বিশ্বাস আঁকড়াইয়া ধরিয়া এতদিন ফিল্মে কাজ করিয়া যাইতেছিলেন তাহাই সত্যরূপ লাভ করিতে চলিয়েছে। যতদিন শাকিবকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়াইয়া ধরিয়া পয়সা-কড়ি কামাই করিয়া যাওয়া যায়, ততদিনই থাকিব-উহার এই নীতিই যেন দৃশ্যমান হইয়া উঠিয়াছে। পর সমাচার হইল এই, অপু বিশ্বাসকে নাকি এখন কোথাও খুঁজিয়া পাওয়া যাইতেছে না। তন্নতন্ন করিয়াও তাহার সন্ধান পাওয়া কঠিন হইয়া পড়িয়াছে। তাহার মোবাইল খানিও বাজিতেছে না। তাহার কাছের মানুষরা বলাবলি করিতেছে, অপু বিশ্বাস ইতোমধ্যে পোটলা-পুটলি গুছাইয়া লইয়াছেন। তাহার সহায়-সম্পদ বিক্রি করিবার প্রক্রিয়াও শুরু করিয়াছেন। সবকিছু গুছাইয়া চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে সরাইয়া নেয়ার উদ্যোগ লইয়াছেন। তাহার কর্মকাÐ দেখিয়া এমন বোধ হইতাছে, তিনি এ দেশ ছাড়িয়া পরিবার-পরিজন লইয়া ভারতে চলিয়া যাইবেন। অবশ্য স্মরণ করা যাইতে পারে, অপু বিশ্বাসের এক বোন ও আত্মীয়-স্বজন ভারতে বসবাস করেন। সেখানে প্রায়ই অপু বিশ্বাস বেড়াইতে যান। তবে এবার তাহার আচরণ অনেকটা রহস্যজনক হইয়া উঠিয়াছে। ইহাতে তাহার ঘনিষ্ঠজনরা ধারণা করিতেছেন, অপু বিশ্বাস এইবার আর বেড়াইতে নহে, চিরতরে ভারত চলিয়া যাইতে পারেন। অবশ্য এতে যে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এমন কোনো বড় ক্ষতি হইয়া যাইবে, তাহা মনে করিবার কোনো কারণ নাই। সবাই জানেন, অপু বিশ্বাস ¯্রােতের মধ্যেই আসিয়াছিলেন, ¯্রােতের মধ্যেই ভাসিয়া চলিয়াছেন, ইহাতে চিহ্ন রাখিবার মতো কোনো খুঁটি গাড়িতে সক্ষম হন নাই। এখনই বোঝা যাইতেছে, অপু বিশ্বাস বলিয়া কোনো নায়িকা সিনেমা জগতে ছিল কিংবা তাহার অনুপস্থিতি হাহাকার সৃষ্টি হইয়াছে এমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাইতেছে না। ইহার কোনোরূপ প্রভাবও কোথাও পরিদৃষ্ট হইতেছে না। বলা বাহুল্য হইবে, অপু বিশ্বাস যেই দিন নিজের পা শাকিবের পায়ের উপর রাখিয়া শিশুদের মতোই হাঁটিয়া চলিবার রীতি গ্রহণ করিয়াছিলেন, উহা যে একদিন শনির দশা হইয়া উঠিবে, ইহা সকলে বুঝিলেও অপু বুঝিতে পারেন নাই। এখন তিনি অভিমান করিয়া চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নিলেও বিশেষ ক্ষতি হইয়া যাইবে বা থাকিলেও বিশেষ কোনো উপকার হইবে, এমন বোধ বোধকরি কাহারো মধ্যে কাজ করিবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন