জাতীয় নাগরিকপঞ্জির আতঙ্কে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আত্মঘাতী হলেন আরও এক ব্যক্তি। এবার ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের শোলাদানা গ্রাম। নিহতের পরিবারের দাবি, পরিজনদের সঠিক পরিচয়পত্র না থাকায় দিনকয়েক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তাই বাধ্য হয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন ওই ব্যক্তি।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের শোলাদানা গ্রামের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা কামাল হোসেন মণ্ডল। তবে তার ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং রেশন কার্ডে বেশ কিছু ভুলভ্রান্তি ছিল। তাই দিনকয়েক ধরে ওই ভুল সংশোধনের জন্য দৌড়োদৌড়ি করছিলেন। ইতিমধ্যেই আবার বাড়ির দলিলও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। একদিকে পরিচয়পত্রে ভুল আর তার উপর দলিল না পাওয়ায় আশঙ্কার প্রহর গুনছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের কামাল। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে এনআরসি হলে তার নিজের এবং পরিজনদের কী হাল হবে, সেই ভাবনায় ছিলেন ওই ব্যক্তি। দুশ্চিন্তায় খাওয়াদাওয়াও প্রায় ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। নিহতের স্ত্রীর দাবি, তার স্বামী ভেবেছিলেন দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সস্ত্রীক আত্মঘাতী হবেন। তবে তাতে রাজি ছিলেন না স্ত্রী। এই নিয়ে দু’জনের বাকবিতণ্ডাও হয়।
ইতিমধ্যেই রোববার ভোরবেলা থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না কামাল হোসেন মণ্ডলের। কিছুক্ষণের মধ্যেই কামালের স্ত্রী খবর পান বাড়ির অদূরেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন তার স্বামী। তড়িঘড়ি প্রতিবেশীদের উদ্যোগে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে তাতে লাভ কিছুই হয়নি। ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে কামালের। খবর পেয়ে বসিরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দেহ উদ্ধার করে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় নিহত কামাল হোসেন মণ্ডলকে।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও এনআরসি আতঙ্কে রাজ্যে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার হিঞ্জলগঞ্জ এলাকায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল একই কারণে। শুধু উত্তর ২৪ পরগনাই নয়, রাজ্যের প্রতিটি জেলার বাসিন্দা মূলত সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষদের তাড়া করছে এনআরসি আতঙ্ক। তালিকায় নাম না উঠলে কী হবে তা ভেবে ইতিমধ্যেই আত্মঘাতী হয়েছেন রাজ্যের ২ বাসিন্দা। এনআরসি নিয়ে দুশ্চিন্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়াতে মারা গিয়েছেন একজন। অন্যদিকে, নথি সংশোধনের লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু হয়েছে বালুরঘাটের এক বাসিন্দার। সূত্র: দ্য ওয়াল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন