এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের (সিএএ)পর জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধীকরণ বা এনপিআর-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন প্রথিতযশা লেখিকা তথা সমাজকর্মী অরুন্ধতী রায়। তার মতে, এনআরপি আদতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির প্রথম ধাপ। তাই প্রথম থেকেই এনপিআরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন তিনি। দেশবাসীর কাছে তার পরামর্শ, ‘এনপিআর করতে এলে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করুন। তাহলেই এই প্রক্রিয়া রুখে দেওয়া যাবে।’ বুধবার সিএএ’র বিরোধী আন্দোলন নিয়ে পুলিশের আগ্রাসী মনোভাবেরও সমালোচনা করেন লেখিকা। তার কথায়, ‘আমরা গুলি, লাঠিপেটা খাওয়ার জন্য জন্মাইনি।’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এনআরসি বিরোধী আন্দেোনে যোগ দিয়েছিলেন অরুন্ধতী রায়। সেখানেই কেন্দ্র সরকারের সিএএ, এসআরসি ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। লেখিকার কথায়, ‘প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করুন। এনপিআর করতে দেবেন না। এর জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার। প্রয়োজনে এনপিআরের সময়ে ভুল তথ্য এবং ঠিকানা দিয়ে এর বিরোধিতা করুন।’ সাধারণ নাগরিককে সচেতন করতে লেখিকার বার্তা, ‘ওরা আপনার বাড়ি যাবে, আপনার নাম, ফোন নম্বর নেবে এবং আধার এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো নথি দেখতে চাইবে এবং তারপর এনপিআর এনআরসি-র তথ্যসমগ্রে পরিণত হবে।’ অরুন্ধতীরায়র অভিযোগ, ‘জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ মুসলিমদের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করবে।’
এদিন সমাজকর্মী তথা লেখিকা অরুন্ধতী রায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও নিশানা করেন। লেখিকার অভিযোগ, ‘গোটা দেশে এনআরসি চালু নিয়ে দিল্লির সভায় মিথ্যে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এমনকী দেশে কোনও বন্দি শিবির নেই বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জেনেশুনেই মিথ্যে বলেছেন কারণ তার নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম রয়েছে।’
একই সঙ্গে অরুন্ধতী রায়ের আবেদন, ‘এনআরি ও সিএএ-র বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করছেন তাদের বিভিন্ন রাজ্যের থেকেও সঠিক প্রতিশ্রুতি আদায় প্রয়োজন। যাতে রাজ্য সরকারগুলিও নাগরিকত্ব নিয়ে এই পদক্ষেপগুলি বাস্তবায়িত না করে।’ অরুন্ধতী রায় উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের উপর পুলিশি হামলা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তার কথায়, ‘উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের উপর হামলা চলছে। পুলিশ ঘরে ঘরে ঢুকে অবাধে লুঠপাট চালাচ্ছে।’ আগেও একাধিক বিষয়ে মোদি সরকারের সমালোচনায় প্রথম সারিতে দেখা গিয়েছে বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত এই সাহিত্যিককে। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। এখন দেখার, তার আবেদনে আরও কতটা দানা বাঁধে এনআরসি বিরোধী আন্দোলন। সূত্র: টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন