শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কারা নেপালিদের ও ক্যাসিনো মেশিন আমদানি করেছে

সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন রিজভীর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই ক্যাসিনো চলছে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২০০৬ সাল থেকে বিএনপি ক্ষমতায় নেই। ক্যাসিনো যদি বিএনপি শুরু করে থাকে তাহলে ১৩ বছর সেটি চালু রাখলেন কেন? বন্ধ করলেন না কেন? হাছান মাহমুদ সাহেবও জানে এবং এদেশের প্রতিটি সচেতন মানুষ জানেন, কবে, কোথায়, কারা ক্যাসিনো সংস্কৃতি চালু করেছে।

কারা শতাধিক ক্যাসিনো চালিয়ে আসছেন। তাদের গডফাদার কারা। কারা নেপালীদের হায়ার করে ক্যাসিনো চালাতে এদেশে এনেছে। কারা ক্যাসিনো মেশিন আমদানী করেছে। এগুলোতো বিএনপি’র শাসনামলে শুনা যায়নি। তারাতো ক্ষমতায় এক যুগ, এই ১২ বছর কি বিএনপি ক্ষমতায় ছিল? গতকাল (বুধবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ক্যাসিনো শব্দটির সাথে পরিচিত নয়। মাত্র ৭/৮ দিন হলো তারা ক্যাসিনো শব্দটি শুনছে আওয়ামী লুটেরাদের কল্যাণে। কিন্তু তথ্যমন্ত্রী বলেছেন জিয়াউর রহমানের আমল থেকে ক্যাসিনো চলছে, মির্জা আববাস ক্যাসিনো শুরু করেছে, হাওয়া ভবনে ক্যাসিনো ছিল। তাহলে সে সময়ের গণমাধ্যমের কোথাও কি ক্যাসিনোর কথা প্রকাশিত হয়েছিল? আওয়ামী লীগের মালিকানায় অনেক সাংবাদপত্র ছিল। কোথাওতো একটি শব্দ পাওয়া যায়নি। যখন মুখোশ খুলে গেছে তখন সেটি ঢাকতে তথ্যমন্ত্রীরা সভাবসুলভভাবে মানুষের মধ্যে বিরক্ত উদ্রেককারী ডাহা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্যাসিনো-জুয়া বিএনপির সময়ে শুরু হলে ১২ বছর ক্ষমতায় থেকে কেন ধরলেন না? বাড়িতে বস্তা বস্তা টাকার ভাগ গেলে কেন ধরেননি? তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবকে ধন্যবাদ। তিনি সাচ্চা কথাটি বলেছেন ‘মিথ্যা কথা বলে লাভ নেই, আওয়ামী লীগের সময়ই ক্যাসিনো শুরু হয়েছে’। তথ্যমন্ত্রীর এসব মিথ্যাচারের উদ্দেশ্য শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায়কে কালিমালিপ্ত করার জন্য একটা ব্যার্থ প্রচেষ্টা।

রিজভী বলেন, বিবিসি’র অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় ক্যাসিনো সংস্কৃতির সূচনা হয়েছে কলাবাগান ক্লাবের হাত ধরে প্রায় ৭/৮ বছর আগে। যুবলীগের কয়েকজন নেতার নিয়ন্ত্রণে। অপর একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় ক্যাসিনোর বিস্তার ঘটান নেপালি নাগরিক দীনেশ ও রাজকুমার। ২০১৫ সালে ভিক্টোরিয়া ক্লাবে ক্যাসিনো খোলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে তারা অবৈধ এ ব্যবসা শুরু করেন। একজন প্রাবশালী যুবলীগ নেতার তত্ত্বাবধানে এরা একের পর এক ক্যাসিনো রুলে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে পাচার করেন। আর যুবলীগ নেতারা দেশে-বিদেশে গড়েন টাকার পাহাড়।

রিজভী বলেন, শতাধিক ক্যাসিনোতে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা উড়ছে অবৈধভাবে। বিভিন্ন শহরে কিংবা রাজধানীতে এসব জুয়া,ক্যাসিনো কি রাতারাতি হয়েছে? প্রশাসন কি জানতো না? অনির্বাচিত এমপিরা কি জানতো না? চট্টগ্রামের এক হুইপতো ১৮০ কোটি টাকা আয় করেছে ক্যাসিনো থেকে। এগুলো কি প্রশাসন জানতো না? হোম মিনিস্ট্রি জানতোনা? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানতেন ন ? জানতেন না প্রধানমন্ত্রী? সবাই জানতেন।এখন ধরা পড়ার পর লজ্জা শরমও পাচ্ছেন না তারা। তারা চাঁদাবাজি করে অবৈধ ক্যাসিনো আর অনৈতিক কাজে মগ্ন থেকেছেন এতোদিন। নিজেদের পকেট আর ব্যাংক ব্যালেন্সের উন্নয়ন করে ফুলে ফেঁপে একেকজন টাকার পাহাড় বানাচ্ছে। যারা আইন প্রয়োগ করবে সেই পুলিশ এখন সরকারী দলের পান্ডা হিসাবে কাজ করছে। তাদের গডফাদারদের কেন ধরা হচ্ছে না? রাঘব বোয়ালদের হাতে নিশ্চয়ই জাতীয় বাজেটের সমান টাকা রয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখন থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে তাই প্রলাপ বকছেন। এসব বন্ধ করুন। বাংলাদেশের মানুষকে কি বোকা ভাবেন? শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যাবেনা।
ক্ষমতাসীনরা টাকা লুকানোর জায়গা পাচ্ছে না মন্তব্য করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছোটখাট নেতাদের ঘরে ঘরে অবৈধ টাকার খনি আবিস্কৃত হচ্ছে। জুয়া,ক্যাসিনো, চাঁদাবাজী, লুটতরাজ করে ঘরে ঘরে গড়ে তুলেছে টাকশাল। এতো টাকা যে লুকানোরও জায়গা পাচ্ছে না। কাজের লোকের বাড়িতেও কোটি কোটি টাকা সিন্দুকে ভরে লুকিয়ে রেখেছে। একটি মুসলিম প্রধান দেশকে নিষিদ্ধ জুয়া-ক্যাসিনোর দেশে পরিনত করেছে সরকার।

রাঘব-বোয়ালরা ধরাছোয়ার বাইরে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, তথাকথিত শুদ্ধি অভিযানের নামে ধরা হচ্ছে কাচকি মাছ। দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের টিকিটিও স্পর্শ করতে পারেনি। দুর্নীতি ও লুটপাটের গডফাদারাই এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে সবকিছু । তাদের ধরতে পারলে দেখা যাবে একেকজনের ভান্ডারে একেকটি টাকার ব্যাংক আছে।
আওয়ামী লীগের মিথ্যাচারে জনগণ হাসাহাসি করে মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন আর আওয়ামী লীগ নেই। দলটি এখন তাদের রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে সুবিধাবাদী, দুর্নীতিবাজ, জুয়াড়ী ও চাপাবাজদের চক্রে পরিণত হয়েছে। এখনো সময় আছে, সময় থাকতে সাবধান হোন, বেøম গেইম বন্ধ করুন, একটা তাহরির স্কয়ার হলে কেউ পাশে থাকবেনা। জনগণের প্রতিরোধের আওয়াজ সর্বত্র শোনা যাচ্ছে। পতন অনিবার্য ।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন