শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কাঁটাতারের বেড়া রোহিঙ্গা জন্য হবে বন্দিশিবির

বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা স্থগিত করতে বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তারা দাবি করেছে, এতে রোহিঙ্গাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার প্রত্যাখ্যান করা হয়। এ বিষয়ে গতকাল (নিউ ইয়র্কে ৩০ সেপ্টেম্বর) দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহবান জানানো হয়। এতে বলা হয়, এমন বেড়া ও পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ পরিকল্পনা ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিবৃতিতে বলেছে, যখন কর্তৃপক্ষের উচিত শিবিরে আশ্রয় গ্রহণকারীদের সুরক্ষা দেয়া তখন এমন নিরাপত্তা বিষয়ক পদক্ষেপ নেয়া উচিত হবে না। যা তাদের মৌলিক অধিকার ও মানবিক প্রয়োজনকে প্রত্যাখ্যান করে। প্রস্তাাবিত পদক্ষেপগুলো মুক্তভাবে চলাচল সীমাবদ্ধ করে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুত্ব ও ভারসাম্য রক্ষা করে না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড এডামস বলেন, মিয়ানমারে ভয়াবহ নৃশংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তিনি ওই আশ্রয় শিবিরকে একটি মুক্ত বন্দিশিবির বানাতে চাইছেন। রোহিঙ্গাদেরকে বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকার বিশ্বজুড়ে যে শুভেচ্ছা বা সুনাম অর্জন করেছে তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রতিরক্ষা বিষয়ক বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডি কমিটি এক সুপারিশে আশ্রয়শিবিরের চারপাশে নিরাপত্তামূলক বেড়া নির্মাণের সুপারিশ করে, যাতে শিবির থেকে একজনও মানুষ বের হতে না পারেন, আবার একজনও মানুষ ক্যাম্পের ভিতরে প্রবেশ করতে না পারেন। এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লিখেছে, শরণার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে তাদের অবাধ চলাচলকে প্রত্যাখ্যান করার মধ্য দিয়ে তাদের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। জরুরি অবস্থায় অথবা জরুরি স্বাস্থ্য সেবা অথবা অন্য কোনো রকমের মানবিক সেবার ক্ষেত্রে তাদেরকে উদ্ধার করার প্রয়োজনীয়তা এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, শরণার্থীদের আশ্রয়শিবিরে উত্তেজনা ও বিপদ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছেন নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। শিবিরে বিভিন্ন বাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করছেন আশ্রয়গ্রহণকারীরা। একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, স্থানীয় একজন রাজনীতিক ওমর ফারুক খুন হয়েছেন ২২ আগস্ট। তারপর থেকে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা ক্রসফায়ারে কমপক্ষে ১৩ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে হত্যা করেছে। তিনি বলেছেন, এর মধ্যে ওমর ফারুক হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে ১১ জনের বিরুদ্ধে।
ব্রাড এডামস বলেছেন, শরণার্থীদের অবাধ চলাচল প্রত্যাখ্যান করে তাদের সব রকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা নিরাপত্তার প্রেক্ষিতে যথাযথ পদক্ষেপ হতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের উচিত ভয়াবহ নৃশংসতা থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, তাদেরকে আরো নির্যাতন করা উচিত নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন