পদ্মার মোহনায় বাংলাদেশের সীমানায় ইলিশ ধরার সময় ভারতীয় জেলেকে আটককে কেন্দ্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ)’র মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিএসএফের এক জওয়ান নিহত ও একজন আহতের খবর জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম জি-২৪। তারা জানায়, আহত জওয়ান নাম রাজবীর সিং বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সে বিএসএফের হেড কনস্টেবল।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় বড়াল নদীর পদ্মার মোহনায় নদীতে ইলিশ ধরার সময় ভারতীয় জেলে প্রনব মন্ডলকে আটকের ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক মেজর আসিফ বুলবুল জানান, ভারতীয় একজন জেলে তাদের কাছে আটক রয়েছে। বিজিবি-বিএসএফ গুলিবিনিমিয় হয়েছে। এদিকে, সন্ধ্যা ৬টার দিকে চারঘাট থানার ওসি সমিত কুমার জানান, বিএসএফের এক জওয়ান নিহত হওয়ায় তারা ৪টার বৈঠক এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেয়। তবে সন্ধ্যায় তারা পতাকা বৈঠকে উপস্থিত হয়েছেন।
পদ্মায় মাছ ধরা প্রতিরোধ অভিযানে থাকা চারঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রজনন মৌসুমের জন্য এখন নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ অবস্থায় জেলেরা যেন নদীতে ইলিশ শিকার করতে না পারে সে জন্য বিজিবি সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নদীতে অভিযানে যায়। তারা দেখেন, পদ্মা-বড়ালের মোহনায় বাংলাদেশের সীমানার ভেতর একটি নৌকায় করে তিনজন ভারতীয় জেলে ইলিশ শিকার করছেন।
তিনি বলেন, তারা গিয়ে তাদের আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় দুইজন পালিয়ে যান। আর একজনকে আটক করা সম্ভব হয়। এ সময় পালিয়ে যাওয়া জেলেরা গিয়ে বিএসএফকে বিষয়টি অবহিত করে। বিএসএফ সদস্যরা এসেই গুলি ছোড়ে। বিজিবিও এর প্রতিবাদ জানিয়ে গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক রাউ- গুলি বিনিময় হয়। একপর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটে। এ ঘটনার পর প্রনব মন্ডল নামের একজন ভারতীয় জেলেকে আটক করে বিজিবির চারঘাট করিডর সীমান্ত ফাঁড়িতে আনা হয়। জব্দ করা হয়েছে তার ইলিশ শিকারের জালও।
অন্যদিকে, গোলাগুলির ঘটনায় বিএসএফের এক জওয়ানের মৃত্যু ও একজন আহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। ভারতের জি-২৪ ঘণ্টার খবরে বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির চর পাইকমারির জিরো পয়েন্টে বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির গুলিবিনিময় হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় বিজয় ভান নামে এক বিএসএফ জওয়ান। আহত হয়েছেন আরও একজন। আহত জওয়ানের নাম রাজবীর সিং। তিনি বিএসএফ-এর হেড কনস্টেবল।
উল্লেখ্য, পদ্মা নদীর এই অংশটিতে প্রায়ই ভারতীয় জেলেরা এসে মাছ ধরে নিয়ে যায়। বিএসএফও স্পিডবোট নিয়ে টহল দেয়। এদের হাতে নাজেহাল হয় বাংলাদেশী জেলেরা। নদী তীরবর্তী মানুষের অভিযোগ ভারতীয় জেলে আর বিএসএফের দাপটে তারা তটস্থ থাকেন। এলাকাবাসী জানান পালিয়ে যাওয়া ভারতীয় জেলেদের কথা শুনে এক তরফাভাবে বিএসএফ এসে গুলি বর্ষন শুরু করে। বাধ্য হয়ে বিজিবি পাল্টা গুলি বর্ষন শুরু করলে তারা পালিয়ে যায়। এ নিয়ে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন