পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে উৎখাতের জন্য দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে অতি রক্ষণশীল ধর্মীয় সংগঠন জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম। দলটির নেতা মাওলানা ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর এই হুমকির মুখে পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ইমরান খান। এমনকি আগামী ২৭ অক্টোবর ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চকে কেন্দ্র করে কোনো চাপ নিচ্ছেন না বলেও দাবি তার।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দেশটির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং বিশ্লেষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বিরোধী দলগুলোর এসব কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী নিজের মত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ার বিষয়ে ইমরান খান বলেন, ‘এখন আমার পদত্যাগের বিষয়ে কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি পদত্যাগ করছি না। দেশকে অর্থনৈতিক সংকট থেকে পুরোপুরি মুক্তি দেওয়ার আগে আমি এখান থেকে সরছি না।’ এ সময় দেশব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব দূরীকরণকে নিজের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি মাওলানা ফজলুর রহমান নেতৃত্বাধীন দল জমিয়ত উলামার নেতৃত্বে বিরোধীদের সম্পূর্ণ শন্তিপূর্ণভাবে আজাদি মার্চ পালনের অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছিল পাক সরকার। পরবর্তীকালে গত বুধবার জমিয়তের সঙ্গে আলোচনার জন্য গঠিত কমিটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বৈঠকে পিটিআই সরকার সিদ্ধান্তটি জানায়।
এ দিকে পাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়, সরকার দেশে গণতান্ত্রিক আদর্শ বহাল রাখার দৃঢ় বিশ্বাস থেকে প্রস্তাবিত আজাদি মার্চ আয়োজনের অনুমতি দিতে যাচ্ছে। তবে সে ক্ষেত্রে যদি এটি আইন ও সংবিধানের পরিধিভুক্ত হয় তবেই তা বাস্তবায়িত হবে। তাছাড়া কর্মসূচিটি ঘিরে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট এবং ইসলামাবাদ হাইকোর্টের সিদ্ধান্তও ব্যাখ্যা করা হবে বলেও মন্ত্রণালয়ের সেই বিবৃতিতে জানানো হয়।
অপর দিকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমে ‘দ্য ডনকে’ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিশ্বাস করেন প্রত্যেক প্রতিবাদকারীদের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। মূলত সেই চিন্তা থেকেই আগামী ২৭ অক্টোবর ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচি আয়োজনের ডাক দেন জমিয়ত উলামা-ই-ইসলামের নেতা মাওলানা ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খানের সরকার সম্পূর্ণ অদক্ষ এবং অবৈধ। কেননা নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ইসলামাবাদ অভিমুখে পদযাত্রা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা খুব শিগগিরই করা হবে। যাদের দেশ শাসন করার কোনো অধিকার নেই, অবিলম্বে তাদের পদত্যাগই আমাদের একমাত্র দাবি।’
বিশ্লেষকদের মতে, উলামা-ই-ইসলাম পাকিস্তানের এমন একটি ধর্মীয় রাজনৈতিক দল; যাদের গোটা দেশের বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে অনেক ধর্মীয় কট্টরপন্থি অনুসারী রয়েছে। তারা দলের প্রয়োজনে যে কোনো সময় নিজেদের নিবেদিত রাখতে প্রস্তুত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন