ক্লাস পার্টি, র্যাগ শব্দগুলো অনেক পরিচিত হলেও ‘ইন্ট্রো’ কথাটা অনেকাংশেরই ধারণার বাইরে। ‘র্যাগ’ যেমন বিশ^বিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শেষের স্মৃতি বহন করে, ‘ইন্ট্রো’ তেমনি এর ব্যতিক্রম। বিশ^বিদ্যালয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয়া বলা যায়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে এই ইন্ট্রো’র প্রথম প্রচলনটা করে বিশ^বিদ্যালয়ের ১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থীরা, যারা এরই মাঝে ‘র্যাগ’ও উদযাপন করে ফেলেছেন। সেই থেকে শুরু। ধরতে গেলে বিশ^বিদ্যালয়টিতে এখন ঐতিহ্য হয়ে গেছে এই ইন্ট্রো। ক্যাম্পাসে প্রবেশের এক বছরের মাথায় ইন্ট্রোর কাজটা সেরে ফেলে প্রতিটা ব্যাচই।
মাঝে দু’দফা বিশ^বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে একবছরের কিছুটা বেশি সময় পার হয়ে গেলেও নিজেদের একবছর পূর্তি উপলক্ষে পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠান ‘ঋদ্ধ ইন্ট্রো-১৩’-এর আয়োজনে পুরোটাই সফল সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাসের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল বিশ^বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা। তারপর একে একে কেটে গেছে বছরখানেকের কিছুটা বেশি সময়। ব্যাচের নাম হয় ‘ঋদ্ধ’। তারই ধারাবাহিকতায় এই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জানুয়ারির ১৪ থেকে ১৬ তিনদিনব্যাপী পালন করে ‘ঋদ্ধ ইন্ট্রো-১৩’।
আয়োজনের শুরুটা হয়েছিল পায়রা অবমুক্তকরণ দিয়ে শেষটা হলো ডিজে পার্টির মাধ্যমে। মাঝে থ্রিডি পেইন্টিং, টি শার্ট উন্মোচন, বর্ণাঢ্য র্যালি, কেক কাটা, মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা,পুরো সিলেট শহরব্যাপী সাইকেল র্যালি, ‘ওপেন কনসার্ট’, খেলাধুলা, ম্যাগাজিনসহ কি ছিল না তিনদিনের এ ম্যারাথনে? এর আগে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মাঝে ক্যালেন্ডার বিক্রি, ফিল্ম ফেস্টিভাল এবং শাবিতে দ্বিতীয় বারের মতো থ্রিডি রোড পেইন্টিং সম্পন্ন হয় এই গুটিকয়েক ছেলেমেয়েদের হাত ধরেই। বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় নবীনবরণ ছাড়া একই ব্যাচের সবাইকে একসাথে পাওয়া অনেকটাই দুষ্কর। তাই তো, ‘ইন্ট্রো’ উপলক্ষে সবাইকে একসাথে পেয়ে আনন্দে উৎসবে, সেলফিতে মুখরিত ছিলো ক্যাম্পাস। শিক্ষকদের পে-স্কেলের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ফলে চাপ একটু কম ছিল বলে মুচকি হাসলেন অর্থনীতি বিভাগের নাদের চৌধুরী।
‘ক্যাম্পাসে আসার পর এখন পর্যন্ত আমি তিনটি ‘ইন্ট্রো’ উপভোগ করেছি। তবে এখন পর্যন্ত সেরা ‘ইন্ট্রো’ এটি, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।’ এমনটিই ফেসবুক পেজে লিখে দিলেন সিনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থী তারেক বিন আব্দুল্লাহ।
তারুণ্যকে ধরে রেখে সম্প্রীতির এ বন্ধনে জীবনের বাকিটা সময় এভাবেই পার করবে এ কামনায় শেষ হয় তিনদিনব্যাপী এ আয়োজন। সময়ের কাছে সব রেখে আসতে হয়, তাই তিনদিন কিভাবে যেন পার হয়ে গেল বুঝতেই পারছে না অনেকেই। হয়তো চিরচেনা সেই অপেক্ষা, আবার কি এমন দিন আদৌ আসবে ?
ষ মেহেদী কবীর
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন