ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া নাগরিকত্ব বিলের নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মঙ্গলবার এক টুইটার পোস্টে নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদী আদর্শের বিষাক্ত মিশ্রণ থেকে এই বিল এসেছে।’
ইমরান খান জানান, এই বিলটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সব বিধি এবং পাকিস্তান-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব চুক্তি ভঙ্গ করেছে। তিনি বলেন, আমরা ভারতীয় লোকসভার নাগরিকত্ব বিলের তীব্র নিন্দা জানানই। যে বিলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও পাকিস্তানের সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির সব বিধি ভঙ্গ করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট মোদি সরকার আরএসএসের ‘হিন্দু রাষ্ট্রের’ নকশা বাস্তবায়নে কাজ করছে।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিলটির নিন্দা জানিয়ে বলেছে, মানবাধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক ঘোষণার পুরোপুরি লঙ্ঘন এবং ধর্মীভিত্তিক বৈষম্য দূর করার যে আন্তর্জাতিক চুক্তি সেগুলোও লঙ্ঘিত হয়েছে এই বিলে।
সোমবার ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়েছে বিতর্কীত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল। আইনটি কার্যকর হলে ভারতে আশ্রয় নেয়া অমুলিম শরণার্থীরা নাগরিকত্ব পাবে। মুসলিমদের বাদ দিয়ে আইনটি করার কারণেই সেটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রস্তাবিত ওই আইনে বলা হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে যে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর ভারতে গিয়েছেন তাদের বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরা হবে না। তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত মার্কিন কমিশন ইউএসসিআইআরএফ বলেছে, নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ‘বিপজ্জনকভাবে ভুল দিকে বাঁক নিচ্ছে। যদি ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই এই বিল পাস হয়ে যায় তাহলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দাবি করা হয়েছে কমিশনের পক্ষ থেকে।’
বিলটি মন্ত্রী সভায় অনুমোদনের পর সোমবার ৩১১-৮০ ভোটে পাস হয়েছে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায়। এখন সেটি তোলা হবে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়। কমিশন জানিয়েছে, যদি বিলটি সংসদের উভয় কক্ষেই পাস হয়ে যায়, তাহলে মার্কিন সরকারের উচিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ অন্যান্য প্রধান নেতাদের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা। ইউএসসিআইআরএফ জানিয়েছে, এই বিলে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা হয়েছে। সূত্র: দ্য ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন