নতুন বৈষম্যমুলক নাগরিকত্ব আইন এবং কাশ্মীর পরিস্থিতির ফলে লাখ লাখ মুসলিম ভারত থেকে পালাতে পারে। সোমবার জেনেভায় শরণার্থী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকারের নীতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে ব্যাপক শরণার্থী সঙ্কটের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ার করেন, বড় ধরণের শরণার্থী সঙ্কট তৈরি হলে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘শুধু যে সম্ভাব্য শরণার্থী সঙ্কট নিয়েই যে আমরা উদ্বিগ্ন তা নয়, একই সাথে আমরা উদ্বিগ্ন যে এ নিয়ে দুই পারমানবিক অস্ত্রধর দেশের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়ে যতে পারে।’ ইমরান খান বলেন, ‘পাকিস্তানের পক্ষে নতুন করে আর শরণার্থীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখনই এদিকে নজর দেওয়া উচিৎ।’ তিনি বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতা বলে, অসুখের চিকিৎসার চেয়ে, অসুখ যাতে না হয় সেটা করারই শ্রেয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনই ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে হয়তো এই সঙ্কট এড়ানো সম্ভব হতে পারে।’
পাকিস্তানে প্রায় গত ৪০ বছর ধরে প্রায় ১৫ লাখ আফগান শরণার্থী বসবাস করছে। জেনেভাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী যখন এসব বক্তব্য দিচ্ছেন, ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ছড়িয়ে পড়ো বিক্ষোভ জন্য কংগ্রেসসহ অন্যান্য বিরোধীদের দায়ী করছেন। তিনি বলেন, বিরোধীরাই ভারতের মুসলিমদের মনে ভীতির সঞ্চার করছে।
এদিকে, মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মত ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী দিল্লির সেলিমপুর এলাকায় শত শত মানুষের সাথে পুলিশের সাথে খণ্ড যুদ্ধ হয়।
বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়লে, জবাবে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে এবং লাঠিপেটা করেছে। বিভিন্ন খবরে বলা হচ্ছে, পূর্ব দিল্লির মুসলিম অধ্যুষিত এই এলাকায় একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। অনেক বাস-গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ, তামিল নাডু, কেরালা, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটেও নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। এসব বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। সূত্র: বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন