সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

তার চিকিৎসা নিয়ে কেউ কেউ ভুল তথ্য পরিবেশন ও ব্যবসা ফেঁদে বসেছে

ভালো নেই এন্ড্রু কিশোর

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কয়েক মাস ধরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসার জন্য কয়েক কোটি টাকা প্রয়োজন। এই অর্থ জোগাড় করা তার পক্ষে এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে নিজের ফ্ল্যাট ও অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। তার এই চিকিৎসা ব্যয় মিটাতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনলাইন ফান্ড গঠন করা হয়েছে। কেউ কেউ কনসার্টের আয়োজন করছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এ নিয়ে কেউ কেউ ব্যবসাও ফেঁদে বসেছে। এ্যান্ড্রু কিশোরের চিকিৎসার নামে বিভিন্নভাবে অর্থ জোগাড় করে সেই অর্থ তাকে দেয়া হচ্ছে না। দিলেও যে অর্থ জোগাড় হয়, তার অতি সামান্য তাকে দেয়া হয়। কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়। কনসার্ট অনেক শিল্পী অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও এতে অংশগ্রহণ করেন শুধু বেবী নাজনীন গেয়েছিলেন। এই কনসার্ট থেকে আয় হয় মাত্র ৪ লাখ টাকা। অথচ বলা হয়েছে, কনসার্ট থেকে এ্যান্ড্রু কিশোরকে ২৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এ তথ্য দিয়ে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। তবে তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এ তথ্যটি সঠিক নয়। অন্যদিকে এ্যান্ড্রু কিশোরের চিকিৎসার নামে কেউ কেউ কনসার্টের আয়োজন করে আয়কৃত অর্থের সিংহভাগই নিজেরা রেখে দিচ্ছে। তাকে দেয়া হয় যৎসামান্য অর্থ। এ্যান্ড্রু কিশোরের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ক্লোজআপ তারকাদের কেউ কেউ সম্প্রতি একটি কনসার্ট করে। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকা আয় হলেও এ্যান্ড্রু কিশোরকে দেয়া হয় মাত্র ৩ লাখ টাকা। এভাবে অনেকে তার চিকিৎসার নামে ফায়দা হাসিল করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনলাইনে যে ফান্ড রাইজিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে এ পর্যন্ত মাত্র ৮ হাজার ডলার জমা হয়েছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, এ্যান্ড্রু কিশোরের ক্যামো থেরাপি এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজন ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার মতো। তিনটি সাইকেলে তাকে ২৪টি ক্যামো থেরাপি দিতে হবে। এ্যান্ড্রু কিশোরের পারিবারিক সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত তার ১৬টি ক্যামো থেরাপি দেয়া হয়েছে। তবে বিগত এক মাস ধরে তার ক্যামো দেয়া বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। শারিরীক কিছু জটিলতা দেখা দেয়ায় থেরাপি দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, কবে থেকে পরবর্তী থেরাপি দেয়া হবে তা চিকিৎকরাও নিশ্চিত নন। তার শারিরীক কন্ডিশনের ওপর এটি নির্ভর করছে। সবচেয়ে বড় কথা ২৪টি ক্যামো দেয়ার পর আরও দিতে হতে পারে। এ অবস্থায় অর্থাভাবে এ্যান্ড্রু কিশোরের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। ক্যামো, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, হাসপাতাল খরচসহ বিপুল অর্থের প্রয়োজন। জানা যায়, একেকটি ক্যামোর দাম ৯ লাখ টাকা। ক্যামো দেয়ার পর স্ক্রিনিং ও অন্যান্য টেস্টের জন্য খরচ হয় আরও ২ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে এক ক্যামো সম্পন্ন করতে প্রয়োজন ১১ লাখ টাকা। এ হিসেবে ২৪টি ক্যামো সম্পন্ন করতে প্রয়োজন ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আবার ক্যামোর সংখ্যা যদি বেড়ে যায় তবে এ খরচ কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে তার ক্যামোর সংখ্যা কম ছিল। তার শারিরীক অবস্থার প্রেক্ষিতে তা বেড়ে ২৪ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। পরবর্তীতে আরও বাড়তে পারে। এ অবস্থায় এ্যান্ড্রু কিশোরের পরিবার তার চিকিৎসা খরচ চালানো নিয়ে অত্যন্ত দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে বলা যায়, এ্যান্ড্রু কিশোর ভাল নেই। অথচ কেউ কেউ খবর রটিয়ে বেড়াচ্ছে, অ্যান্ড্রু কিশোরের ক্যামো সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং তিনি ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দেশে ফিরবেন। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করে এ্যান্ড্রু কিশোরের চিকিৎসা ব্যাহত করা হচ্ছে। তার চিকিৎসা নিয়ে একটি মহল যেমন ব্যবসা করছে, তেমনি অসত্য তথ্য পরিবেশন করে ভুল তথ্য দিচ্ছে। এটি এক ধরনের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। এ ধরনের তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন থেকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিরত থাকতে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। বরং তার চিকিৎসায় সহায়তা করে প্রখ্যাত এ সঙ্গীতশিল্পীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন