সিলেট সদর উপজেলার বিমানবন্দর থানা এলাকায় চেঙ্গেরখাল নদী থেকে অবৈধভাবে ছোট বড় শতাধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে চলছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। দীর্ঘদিন ধরে কোটি টাকার সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বড়চর বালুমহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের নজরে পড়েনি। ফলে সরকারের রাজস্ব হরিলুট নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিমানবন্দর থানা থেকে এক দেড় কিলোমিটার দুরত্বের মধ্যে বড়চর বালু মহাল। বিমানবন্দর থানার নিকটবর্তী বড়চর বালু মহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব হরিলুট হলেও যেন দেখার কেউ নেই। সরেজমিন খাদিমনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পিরেরগাঁও থেকে বাইলার কান্দি পর্যন্ত চেঙ্গেরখাল নদীর বড়চর বালুমহাল এলাকা ঘুরে এ ধ্বংসযজ্ঞ দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় বড়চর বালু মহালটিকে ইজারা দেয়নি কর্তৃপক্ষ। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বাণিজ্য করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। স্থানীয়রা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী চক্র। বালু তুলতে বাধা দিলে এলাকাবাসীকে এই মহল প্রাণে মারা, হাত পা ভেঙে দেয়ার হুমকী দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন দিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলেও স্থানীয় প্রশাসন ওই ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বালু উত্তোলনের ফলে ওই এলাকার আশপাশের অনেক কৃষকের আবাদি জমি ভেঙে গেছে। গত দুই বছরে পিরেরগাওঁ গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদের প্রায় ৩০ শতাংশ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে তাঁর প্রায় ৮০ শতাংশ আবাদি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘কত লেখালেখিও হয় কিন্তু বালু তুলা বন্ধ হয় না।’ এলাকাবাসী সূত্র জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করার পরেও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি।
খাদিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দিলওয়ার হোসেন বলেন, বিমানবন্দর থানার আওতাধীন এলাকায় চেঙ্গেরখাল নদীর বড়চর বালু মহাল হইতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক চলছে। স্থানীয়দের সহযোগিতা নিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রণে প্রস্তুত রয়েছি। এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহদত হোসেন বলেন, বড়চর বালু মহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর বা অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া মমতাজ বলেন, বড়চর বালু মহালের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন