শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রেহাই পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:৩৭ এএম | আপডেট : ১২:০৫ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

অভিশংসনের হাত থেকে অল্পের জন্য মুক্তি পেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করছেন। তা হলো অভিশংসনের হাত থেকে রেহাই পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট তিনি। বুধবার সিনেটে দুটি অভিযোগে তাকে অভিশংসিত করার প্রস্তাবে ভোট হয়। প্রথম অভিযোগ ক্ষমতার অপব্যবহার। দ্বিতীয় অভিযোগ কংগ্রেসের বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি। ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রস্তাবে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট পড়ে ৫২টি। বিপক্ষে পড়ে ৪৮ ভোট।

অন্যদিকে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টির অভিযোগে ট্রাম্পের পক্ষে ভোট পড়ে ৫৩টি। তার বিপক্ষে পড়ে ৪৭ ভোট। এ ঘটনার পর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ডেমোক্রেট ন্যান্সি পেলোসি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য চলমান এক হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। পাশাপাশি তিনি সিনেটে রিপাবলিকাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সিনেটে রিপাবলিকানরা আইনহীনতাকে স্বাভাবিক করলেন। সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার বলেছেন, প্রেসিডেন্টকে রেহাই দেয়া নিয়ে সব সময়ই বড় একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন থাকবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

নানা ঘটন অঘটনের মধ্য দিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হওয়ার পর তা পাঠানো হয় উচ্চকক্ষ সিনেটে। সেখানে কয়েকদিনের বিতর্ক শেষে বুধবার অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোট হয়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেটদের অভিযোগ, তিনি আগামী নির্বাচনে তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, ডেমোক্রেট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে ব্যবহার করেছেন। জো বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করতে ইউক্রেনকে দেয়া মার্কিন সামরিক সহায়তাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এ নিয়ে ডিসেম্বরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ডেমোক্রেটরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে আটকে রাখতে পারলেন না তারা। ফলে আগামী নভেম্বরে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে, তাতে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আর অভিশংসনের মুখোমুখি হয়ে তা থেকে রেহাই পেয়ে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনিই যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।

তাকে অভিশংসনের ঐতিহাসিক ওই ভোটে সিনেট যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তার পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয় নি। যদি তিনি অভিযুক্ত হতেন তাহলে তাকে অবশ্যই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যেতে হতো। সেক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজের বা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব অর্পণ করতে হতো ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে। কিন্তু না, তিনি টিকে রইলেন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে আরো চার বছরের জন্য তিনি আগামী ৩রা নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন। ফলে এ বছরটি যুক্তরাষ্ট্র তথা সারা বিশ্বের কাছে নির্বাচনী বছর হিসেবে অভিহিত হবে। বছরজুড়ে সবার চোখ থাকবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে।

ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সব সময়ই প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার পুনর্নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প থেকে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুরোপুরি প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। এখন সময় হলো যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের সেবায় তার ফিরে আসার। ডেমোক্রেটদের করার কিছু নাই। তারা জানে যে, তারা তাকে (নির্বাচনে) পরাজিত করতে পারবে না। তাই তারা তাকে অভিশংসিত করতে চেয়েছিল। এটা হলো ডেমোক্রেটদের একটি নির্বাচনী ভয়াবহ পরীক্ষা। ওদিকে গ্যালাপের এক জরিপ বলছে, এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এপ্রুভাল রেটিং দাঁড়িয়েছে শতকরা ৪৯ ভাগ। এটাকে তার ব্যক্তিগত সবচেয়ে ভাল রেটিং বলে মনে করা হয়।

বুধবারে সিনেটে নিজের বৃত্ত ছেড়ে বেরিয়ে এসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন রিপাবলিকান ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রার্থী মিট রমনি। তিনি ইউটাহ থেকে নির্বাচিত সিনেটর। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার প্রস্তাবে তিনি এই ভোট দিয়েছেন। তবে ডেমোক্রেটদের স্বপ্ন ভঙ্গ করেছেন দুই উদারপন্থি রিপাবলিকান। তারা হলেন মেইনে থেকে নির্বাচিত সিনেটর সুসান কলিনস এবং আলাস্কা থেকে নির্বাচিত সিনেটর লিসা মুরকোওয়াস্কি। ডেমোক্রেটরা আশা করেছিলেন তারা মিট রমনির পথ ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাবে ভোট দেবেন। কিন্তু তারা তা করেন নি।

সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটর ট্রাম্পের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তবে তা তাকে অভিশংসিত করার পর্যায় পর্যন্ত যায় নি। অন্যদিকে মধ্যপন্থি তিনজন ডেমোক্রেট সিনেটর ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেবেন বলে আশা করেছিলেন রিপাবলিকানরা। কিন্তু তারা তা করেন নি। উল্টো তারা তাদের বৃত্তের ভিতরে থেকে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তারা হলেন আরিজোনার সিনেটর কিরস্টেন সিনেমা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার জো মানচিন ও আলাবামার ডগ জোনস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন