টেক্সটাইল খাতে বাংলাদেশকে কতিপয় দেশের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে বাংলাদেশের প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরের একটি কার্যকর ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাষ্ট্রী গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি বিগত প্রায় দু’বছর ধরে ইয়ার্ণ ও ফেব্রিকের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও অনৈতিকভাবে তার বাজারজাতকরনের কারনে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুতের অপর্যাপ্ত সরবরাহ ও মান সম্পন্ন বিদ্যুতের অভাবসহ অন্যান্য কারনে অনেক ছোট ও মাঝারী মানের ফেব্রিক মিল তাদের উৎপাদন ক্ষমতার উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যবহার না করতে পেরে প্রতিযোগিতার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেেেছ। মিল সমিতির তথ্যমতে, ৩০০’রও বেশি মিল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃহষ্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এসব কথা বলেন।
প্রাইমারী টেক্সটাইল সেক্টরে বর্তমানে ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী অর্থ বিনিয়োগ রয়েছে। এ খাতটিকে আবর্তিত করে দেশের যাবতীয় অর্থনৈতিক সাইকেলগুলো পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু গতকাল বৃহষ্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন থেকে বিভিন্ন গ্রাহক শ্রেণীর খুচরা বিদ্যুতের মূল্য হার প্রতি কিলোওয়াট ৬ দশমিক ৭৭ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৭ দশমিক ১৩ টাকায় নির্ধারণসহ অন্যান্য চার্জ বৃদ্ধি টেক্সটাইল খাতের বিদ্যমান অবস্থানকে বিশেষতঃ ক্ষুদ্র ও মাঝারিমানের উইভিং মিল এবং বৃহদাকার স্পিনিং মিল যারা গ্রীড পাওয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে মিল পরিচালনা করছে তাদেরকে বিপর্যস্ত করবে।
বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিটিএমএ থেকে বিভিন্ন সময়ে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানীকে তাদের উৎপাদিত বিদ্যুতের মান নিয়ে যে প্রশ্ন ও তার সমাধানের জন্য যে সব বিষয় উত্থাপন করা হয়েছে তা বিবেচনায় নেয়া হয়নি।
টেক্সটাইল ইন্ডাষ্ট্রীতে বর্তমানে যে ধরণের টেকনোলজি ব্যবহৃত হয় তা পরিচালনার জন্য বর্তমান গ্রীড পাওয়ার উপযুক্ত নয়। তারপরও গ্রীড পাওয়ার নেয়া ও পরবর্তীতে তা মান সম্পন্নভাবে ব্যবহারের জন্য রি-ইনভেস্টমেন্ট করতে হয়। এর ফলে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস বৃদ্ধি পায়। বিটিএমএ’র স্পিনিং, উইভিং ও প্রসেসিং মিলগুলো যারা গ্রীড পাওয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের ইন্ডাস্ট্রী পরিচালনা করছে এবং তাদের তৈরী সুতা ও কাপড় স্থানীয় বাজারে বিক্রয় করছে। এই মিলগুলো এমনিতেই দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন কারণে তাদের পণ্য বাজারজাতকরণে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে ও সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রভাবে শিল্প খাতের নেতিবাচক দিকগুলো বিবেচনায় না নিয়ে বিদ্যুতের মূল্য পুনঃরায় বৃদ্ধি কোনভাবেই যৌক্তিক নয়। গ্রীড পাওয়ারের বিদ্যুতের কোয়ালিটি ও তার সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত ও নিশ্চিত না করে শিল্পখাতে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি পুর্নবিবেচনা করা অত্যাবশ্যক বলে মনে করছে বিটিএমএ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন