অনেকটা হরতাল আবহ ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সমাবেশের সময় ছিল সকাল ১০টা। জেলা ঈদগাহ মাঠে মহাসমাবেশ। নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা আগ থেকেই জেলা শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বাড়তে থাকে মিছিলের সংখ্যা।
শহরসহ আশ-পাশ গ্রাম ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসতে থাকে মিছিল। মিছিলের স্রোতে শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডের যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। কুমারশীলমোড়, তোফায়েল আজম মনুমেন্ট, টিএ রোড, কালীবাড়ি মোড়, কাউতলী মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে সাধারণ মানুষ অবস্থান নেয়। কালীবাড়ি মোড় থেকে ঈদগাহ মাঠ সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকে সারাদিন। এ সড়কে মানুষের তিল ধারনের ঠাঁই ছিল না সকাল থেকেই। বেলা ১২টার মধ্যেই সমাবেশ স্থল ও আশপাশ এলাকায় লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। সমাবেশকে ঘিরে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাড়ে ৩শতাধিক পুলিশ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত সমাবেশ চলে। থেমে থেমে হামদ নাতই রসূল কাসিদা পাঠ করা হয়।
সম্মেলনে ভারতে মুসলমানদের উপর নির্যাতন বাড়ি ঘর ও মসজিদে হামলার নিন্দা জানানো হয়। সে সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করা হয়। সম্মেলনে ৭ দফা দাবি সম্বলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আল্লামা সাজিদুর রহমান। ঘোষণাপত্রে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কট‚ক্তিকারীদের বিচার দাবি করে আইন পাস এবং ভারতের মুসলমানদের উপর অত্যাচার, হত্যা বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশে ১৭ জন তওবা করে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করেন। মহাসম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলার প্রবীন আলেম ও জামেয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার সদরে মুহতামিম আল্লামা আশেক ইলাহী ইব্রাহিমী।
সম্মেলনে মুফতি শাখাওয়াত হোসেন রাজি বলেন, ভারতের মুসলমানদের অবস্থা এখন খুবই নাজুক। মুসলমানদের উপর ভয়াবহ অত্যাচার নির্যাতন চলছে। ভারতের বিভিন্ন এলাকার মসজিদের মিনারে উঠে মাইক ভেঙে ফেলা হচ্ছে, হনুমানের ছবি বসিয়ে দেয়া হচ্ছে। চোখে এসিড দিয়ে মুসলমানদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে।
প্রধান অতিথি আল্লামা জুনায়েদ বাবু নগরী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেই আন্দোলন শুরু হয়েছে। নবী মুহাম্মদ (সা.) কে শেষ নবী না মানলে তারা কাফের। কে কাফের? কে মুসলমান? তা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নির্বাচনে কে জিতবে, কে হারবে তা নিয়ে যেমন বসে থাকা যায় না। জেতার জন্য চেষ্টা করতে হয়। তেমনি ভাবে সকলকে সম্মিলিত ভাবে চেষ্টা করতে হবে। নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ইজ্জত-সম্মান রক্ষায় আমাদেরকে জীবন দিতে হবে। সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, সাবেক মন্ত্রী মুফতী মোহামস্মদ ওয়াক্কাস, মুফতী মোবারক উল্লাহ, আল্লামা শামসুল হক, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন