বিগত বছর (২০২২) রাজশাহীতে ২৪৫ নারী ও শিশু বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার (লফস) নামের মানবাধিকার সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। তথ্যমতে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজশাহীতে হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে ২৬ নারী ও শিশু। এর মধ্যে, ৬ জন শিশু ও ২০ জন নারী। ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৪ শিশু ও ১১ নারী, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১ শিশু ও ১ নারী, ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ৪ শিশু ও ৮ নারীকে, যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৮ শিশু ও ১৩ নারী, শ্লীলতাহানি ঘটেছে আরেক নারীর। পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ১ শিশু ও ২ নারী, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ২ শিশু ও ৪ নারীকে, আত্মহত্যা করেছে ১৮ শিশু ও ২৮ নারী, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ১ শিশু ও ৩ নারী, অপহরণের শিকার হয়েছে ৯ শিশু ও ১ নারী, নির্যাতিত হয়েছে ২৮ শিশু ও ৪৯ নারী এবং পাচারের চেষ্টা করা হয়েছে ৪ শিশুকে। নিখোঁজ হয়েছে ৫ শিশু ও ৩ নারী।
লফসের নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন বলেন, রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতি বিভিন্ন মাত্রায় অবনতি ঘটছে। যৌতুক ও পরকীয়ার কারণে অধিকাংশ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি কিছু টিভি সিরিয়াল পরকীয়াকে উৎসাহিত করছে। এছাড়া পারিবারিক কলহ ও প্রেমঘটিত কারণে হত্যা-আত্মহত্যা ও অমানবিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত ঘটনার বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটে, যা প্রকাশিত হয় না বা কোনও তথ্য জানা যায় না। তারপরও ২৪৫ জনের নির্যাতনের চিত্র পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের কৌশল পরিবর্তন হয়েছে। ধর্ষণ বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। একদিকে বাড়ছে বাল্যবিবাহ, অপরদিকে সংসার ভাঙার তালিকাও লম্বা হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতনসহ সার্বিক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ক্রমশেই অপরাধীরা উৎসাহিত হবে এবং অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন