জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভায় মসজিদ সংলগ্ন সড়কে হনুমানের মূর্তিসাদৃশ্য ডাস্টবিন স্থাপন করেছেন মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকন। এতে পৌরবাসীর তীব্র মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। শুক্রবার আরডিএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন পুরাতন জামে মসজিদে জুমআ’র নামাজের সময় বিষয়টি নিয়ে মুসুল্লিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় মসজিদের ইমাম মূর্তিটি অপসারনের জন্য মেয়রের প্রতি চাপ দিতে স্থানীয়দের অনুরোধ জানান।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার উদ্যোগে গত ৬ মার্চ বিভিন্ন স্থানে হনুমানের মূর্তিসদৃশ্য কয়েকটি ডাস্টবিন স্থাপন করেন মেয়র। সরিষাবাড়ী আরডিএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় গেটেও একটি ডাস্টবিন বসানো হয়। যার পাশেই পুরাতন জামে মসজিদ। স্থানীয় মুসুল্লিরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে মসজিদে ঢুকার সময়ই মূর্তিটি চোখে পড়ে। এতে ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা বিব্রত হয়ে অনেকেই চোখ ঢেকে মসজিদে যান। কাউকে কাউকে মসজিদে গিয়ে পুণরায় অযূ করতে দেখা যায়। এ নিয়ে শুক্রবার জুমআ নামাজের পূর্ব মূহুর্তে মসজিদের মুসুল্লিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মসজিদের পেশ ইমাম মাও. শফিকুল ইসলাম জুমআ’র খুতবায় মূর্তির ডাস্টবিন অপসারণের জন্য মুসুল্লিদের হাত তোলে প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।
মসজিদের ইমাম মাও. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদের পাশে মূর্তির মত ডাস্টবিন থাকায় মুসুল্লিরা বিব্রত হচ্ছে। ইসলাম ধর্মমতে মূর্তি হারাম হলেও, একটি মুসলিম শহরে মসজিদে পাশে মূর্তি বসানো ঠিক হয়নি। এটা শীঘ্রই অপসারণ করতে হবে।’ বিষয়টি নিয়ে তিনি স্থানীয়দের মেয়রকে চাপ প্রয়োগের কথা বললে সবাই হাত তুলে সম্মতি জানান।
পৌরসভা সূত্র জানায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় পৌরসভায় ৫০টি ‘মাঙ্কি ডাস্টবিন’ বসানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়। প্রতিটি ডাস্টবিন বাবদ ৩৯ হাজার টাকা করে মোট প্রায় ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ডাস্টবিনগুলো সরকারি টাকায় বসানো হলেও প্রতিটির গায়ে লেখা হয়েছে ‘সৌঃ মেয়র রোকন’। যা নীতিমালা পরিপন্থী।
নাগরিক প্রতিক্রিয়ায় আরামননগর বাজারের বাসিন্দা কবি ও প্রাবন্ধিক জাকারিয়া জাহাঙ্গীর বলেন, ‘যেসব ডাস্টবিন বসানো হয়েছে তা উন্নত শহর বা শপিংমলের জন্য প্রযোজ্য। সরিষাবাড়ী পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তাঘাটই খানাখন্দ; সামান্য বৃষ্টিতে যেখানে হাটুপানি জমে, সে মফস্বল শহরে এসব ডাস্টবিন নাগরিকদের সাথে তামাশার শামিল।’
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র রুকুনুজ্জামান রোকনের বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘পৌরসভাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ৫০টি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। তবে ‘মাঙ্কি ডাস্টবিন’ বিতর্ক মনে হলে সেগুলো ভেঙে অন্য মডেলে তৈরি করবো।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন