শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাস চালক-হেলপারের পরিকল্পনায় পুলিশ খুন

মূলহোতাসহ গ্রেফতার ৩ : র‌্যাব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত কনস্টেবল মো. শরীফ উদ্দিন আহমেদ হত্যাকান্ডের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এছাড়া এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনও করেছে র‌্যাব। র‌্যাব জানায়, তাকওয়া পরিবহন নামের একটি বাসের হেলপার ও চালকের পরিকল্পনায় শরীফকে হত্যা করা হয়। এমনকি হত্যার পর শরীফের বুকের ওপর বসে ধারালো চাকু দিয়ে গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা।

গতকাল বিকেলে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফি উল্লাহ বুলবুল।
তিনি জানান, এ ঘটনায় গত শনিবার গাজীপুর মহানগরীর শ্রীপুর থানাধীন গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকা থেকে মোফাজ্জল হোসেনকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ময়মনসিংহের তারাকান্দায় অভিযান পরিচালনা করে মাসুদ মিয়া (২৫) ও মনির হোসেনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে মোফাজ্জল হোসেন তাকওয়া পরিবহনের হেলপার এবং মনির চালক। এছাড়া মাসুদ ভাড়াটিয়া খুনি। তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস, রক্তমাখা গাড়ির হুইল রেঞ্জ, একটি চাকু এবং ভিকটিমের তিনটি মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, শরীফ গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত থাকার সুবাদে তাকওয়া বাসের হেলপার মোফাজ্জল হোসেন (২৮) ও চালক মনিরের সাথে ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক ছিল কনস্টেবল শরীফের (৩৩)। অজ্ঞাত কারণে সুসম্পর্ক রূপ নেয় দ্ব›েদ্ব। একপর্যায়ে কনস্টেবল শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে মোফাজ্জল হোসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১ মার্চ কনস্টেবল শরীফকে খুন করার জন্য মোফাজ্জল ১০ হাজার টাকায় ময়মনসিংহের ভাড়াটে খুনি মাসুদকে ভাড়া করা হয়।
তিনি জানান, চুক্তি অনুযায়ী গত ২ মার্চ মাসুদ গাজীপুরে আসে ও মনিরের বাসায় হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়। পরে ৩ মার্চ দুপুরে তাকওয়া বাসের চালক মনির একটি চাকু কিনে মাসুদকে দেয়। একই দিন রাত সাড়ে ১১টায় মোফাজ্জল কৌশলে কনস্টেবল শরীফকে ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে তাকওয়া পরিবহনে ওঠায়। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে চলন্ত বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে লোহার হুইল রেঞ্জ দিয়ে পেছন থেকে শরীফের মাথায় আঘাত করে। অজ্ঞান হয়ে পড়লে মোফাজ্জল ও মাসুদ নাইলনের রশি দ্বারা দুই হাত বাঁধে এবং চাকু দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। এরপর মোবাইল ও টাকা রেখে দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যায়।
শরীফের বুকের ওপর উঠে ধারালো চাকু দিয়ে গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় : র‌্যাব জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৩ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোফাজ্জল কৌশলে কনস্টেবল শরীফকে ভোগড়া বাইপাস এলাকায় নিয়ে আসে ও তাকওয়া পরিবহনে ওঠায়। চালক মনির হোসেন বাসটিকে চালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে শ্রীপুরের মাওনার উদ্দেশে রওনা হয় এবং জয়দেবপুরের ভবানীপুর বাজার থেকে ইউটার্ন নিয়ে পুনরায় চান্দনা চৌরায়ার দিকে যায়।
পথে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তারা বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে ভাড়াটে খুনি মাসুদ লোহার হুইল রেঞ্জ দ্বারা পেছন থেকে শরীফের মাথায় পরপর আঘাত করে। ফলে শরীফের মাথা ফেটে রক্ত পড়তে থাকলে সে অজ্ঞান হয়ে গাড়ির মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। মোফাজ্জল ও মাসুদ দুজন মিলে নাইলনের রশি দ্বারা প্রথমে শরীফের দুই হাত বেঁধে গাড়ির পেছনের দিকে নিয়ে যায় এবং মোফাজ্জল শরীফের বুকের ওপর বসে এবং ভাড়াটে খুনি মাসুদ ধারালো চাকু দ্বারা গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন