স্টাফ রিপোর্টার : মৃৎশিল্প বাংলার লোকশিল্পের অনন্য নিদর্শন। মৃৎশিল্প বাংলাদেশের প্রাচীনশিল্প। পাথরের দুষ্প্রাপ্যতা এবং পাথর পরিবহনে অসুবিধার কারণে বাঙালী শিল্পীদের বিশেষ নৈপুণ্যে পোড়ামাটির শিল্পকর্ম ব্যবহারিক দিকের পাশাপাশি নান্দনিকতায় ক্লাসিক মর্যাদা লাভ করে। বাংলার তামলুক, হরিরায়নপুর ও চন্দ্রকেতূগড়ে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের মৃৎশিল্পের নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী, শৌখিন শিল্পকর্ম, স্থাপত্য শিল্পকর্ম, ভাস্কর্য ছাড়াও বৌদ্ধবিহার, মন্দির, মসজিদের গাত্রালংকার হিসেবে পোড়ামাটির ফলক ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। নদীমাতৃক বাংলাদেশে এই শিল্পমাধ্যমটি প্রাচীন যুগে যেমন সমাদৃত ছিল তেমনি মধ্যযুগ পেরিয়ে আধুনিক ভাবধারায় নান্দনিকভাবে শিল্পমাধ্যমটি বিকশিত হয়েছে এবং বিস্তার লাভ করেছে। লোক ঐতিহ্যের বিবর্তিত এই শিল্পমাধ্যমটিকে তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের ছাত্রদের পোড়ামাটির ৫০টি শিল্পকর্ম এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংগৃহীত পোড়ামাটির শিল্পকর্মের ১০০টি নিদর্শন নিয়ে এই বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৪.০০টায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা শরীফ আনোয়ার। সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন্নবী। প্রদর্শনী উদ্বোধন করে মাননীয় মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেন, সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমাদের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আজ একটি রুগ্নশিল্পে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে গবেষণার মাধ্যমে লোকশিল্পের এই মাধ্যমটি পুনর্জাগরণ ঘটাতে হবে। আর এজন্য এ ধরনের প্রদর্শনী ব্যাপকভাবে আয়োজন করা প্রয়োজন বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রদর্শনীটি আগামী ২৬ জুলাই ২০১৬ পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন