শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

১৬ বছরে সিসিমপুর

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

হালুম, টুকটুকি, ইকরি কিংবা শিকু। আমাদের দেশের শিশুদের কাছে নামগুলো অতি পরিচিত এবং একইসঙ্গে অতি প্রিয়। বলা হচ্ছে জনপ্রিয় শিশুতোষ সিরিজ সিসিমপুরের কথা। দেশের শিশুদের শেখাকে আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য করার লক্ষ্য নিয়ে ‘সিসিমপুর’ নামে যে টেলিভিশন অনুষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৫ সালে, তা ১৫ পেরিয়ে পা রাখল ১৬তম বছরে (১৫ এপ্রিল)।
১৫ বছর ধরে শিশুতোষ এই অনুষ্ঠানটি নির্মিত হচ্ছে তিন থেকে আট বছর বয়সী শিশুর প্রারম্ভিক শিক্ষার চাহিদা পূরণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে। সেইসঙ্গে সিসিমপুরের লক্ষ্য শিশুর পিতা-মাতা এবং শিক্ষকরাও। আনন্দ আর খেলার ছলে সিসিমপুর ভূমিকা রেখে চলেছে শিশুর সামগ্রিক বিকাশে। ভাষা-বর্ণ; গণিত; পরিবেশ; জেন্ডার সমতা; সামাজিক মূল্যবোধ ও আচার-আচরণ; ভিন্নতা ও বৈচিত্রের প্রতি সহনশীলতা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে শেখায় সিসিমপুরের পাঠক্রম। আছে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার; স্বাস্থ্যকর অভ্যাসচর্চা; ভূমিকম্প; রাস্তা পারাপার ও পানিডুবি-বিষয়ক নিরাপত্তা; বিভিন্ন আঘাত প্রতিরোধে সচেতনতা; শিশুদের জমা-খরচ ও সঞ্চয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যসহ আরো অনেক কিছু।
বর্তমানে সিসিমপুরের ১২তম সিজনের প্রচার চলছে। শুরু থেকে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সারা দেশের প্রায় এক কোটি দর্শক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল, যেমন – আরটিভি, চ্যানেল আই, দেশ টিভি ও চ্যানেল নাইনে প্রচারিত হয়েছে। বর্তমানে জনপ্রিয় এই অনুষ্ঠানটি দুরন্ত আর এবং বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে।
২০১০ সালে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ট্রাস্ট পরিচালিত একটি জরিপে সিসিমপুর শিশুতোষ অনুষ্ঠান হিসেবে শীর্ষস্থানীয় এবং সামগ্রিকভাবে তৃতীয় জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হয়েছে। ২০০৭ সালে পরিচালিত এসিপিআরের একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু সিসিমপুর অনুষ্ঠানটি নিয়মিত দেখে, তারা তাদের চাইতে এক বছরের বড় শিশু, যারা সিসিমপুর দেখে না, তাদের চেয়ে ভাষা ও বর্ণ, গণিত এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয়ে বেশি দক্ষতা প্রদর্শন করেছে।
প্রতি বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শিশুদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয়ে পরিণত হয়েছে সিসিমপুর। মেলার প্রতি শুক্র-শনি আর ছুটির দিনগুলোতে ইকরি, হালুম, টুকটুকি আর শিকুর সঙ্গে মজার সময় কাটাতে শিশুদের ঢল নামে। যা ইতোমধ্যেই অমর একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে।
সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ তার সব কার্যক্রমই সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে যৌথভাবে পরিচালনা করে থাকে। গত ১৫ বছরে সিসিমপুর বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে। ইউএসএআইডির অর্থায়নে সিসিমপুরের পথচলা শুরু। নিউইয়র্কভিত্তিক সিসেমি স্ট্রিট নামক শিক্ষামূলক টেলিভিশন-ধারাবাহিকের যৌথ প্রযোজনা সিসিমপুরের কার্যক্রম বাংলাদেশে পরিচালনা করছে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সরকার এবং ইউএসএআইডি বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡বাবধানে ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সহযোগিতায় ২০১০ সাল থেকে সিসিমপুর আউটরিচ প্রকল্পটি দেশের ৬৪টি জেলায় ৩৩৪০টি স্কুলে সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশের কারিগরি সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হয়েছে। এ ছাড়া সিসিমপুর প্রতিনিয়ত নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রচারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
সিসিমপুরের মূলমন্ত্র : পৃথিবীটা দেখছি, প্রতিদিন শিখছি। আর তাই তো, ১৫ পেরিয়ে ২০, ৫০, ১০০ বছর... একদিন সূর্যের সমান প্রাচীন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চলছে সিসিমপুর, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর প্রাক-শৈশবকে পূর্ণাঙ্গ ও বিকশিত করবে বলে।
সিসিমপুর সম্প্রচারের ১৫ বছর পূর্তি এবং ১৬তম বছরে পদার্পন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বটি, যা প্রচারিত হয়েছিল ২০০৫ সালের ১৫ই এপ্রিল, আবার প্রচারিত হবে সিসিমপুর ইউটিউব চ্যানেলে বুধবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে এবং বিটিভিতে বৃহষ্পতিবার বিকাল ৫:৩০ মিনিটে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন