পাকিস্তানের তথ্য ও স¤প্রচার বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. ফেরদৌস আশিক আওয়ান সোমবার বলেছেন যে, আলেমগণ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের করোনাভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশলকে শুধু সমর্থনই করেননি, বরং তাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও আলেমগণের মধ্যে বৈঠক শেষে ধর্ম ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিষয়ক মন্ত্রী নূরুল হক কাদরিকে পাশে নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী।
আওয়ান বলেন, ‘আমাদেরকে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে হবে এবং লড়াই করতে হবে। একই সাথে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, প্রতিদিনের জীবনযাত্রা যেন কাজ করে। আমরা একটি দেশ হিসাবে ভাইরাস, বেকারত্ব এবং ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি - এটিই প্রধানমন্ত্রীর করোনভাইরাস কৌশলটির পিছনে চিন্তাভাবনা এই মুহ‚র্তে এবং এই কৌশলটি সম্মানিত আলেমগণ দৃড়ভাবে স্বীকৃতি এবং সমর্থন দিয়েছেন’।
আওয়ানের মতে, আলেমগণ রমজানের সময় প্রধানমন্ত্রীর মসজিদ পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন এবং যোগ করেছেন যে, তারা তার সিদ্ধান্তকে ‘ইসলাম বান্ধব’ এবং ‘মানবতাবান্ধব’ বলেছেন।
আওয়ান বলেন যে, আলেমদের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান টেলিভিশন (পিটিভি) এবং অন্য সম্প্রচারমাধ্যমে ধর্মীয় মাদরাসা ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ধর্মীয় টেলি-স্কুল চালু করার জন্য নির্দেশনা জারি করবেন যাতে এই ছাত্ররা এবং অন্যরাও করোনাভাইরাস লকডাউনে ঘরে বসে শিখতে পারে।
আওয়ান আরও ঘোষণা করেন যে, প্রধানমন্ত্রী দেশটির ‘অভ‚তপূর্ব’ মহামারীবিরোধী লড়াইয়ে আল্লাহর ক্ষমা ও সহায়তার জন্য শুক্রবার দেশব্যাপী ‘তাওবা দিবস’ আহŸান করবেন’।
প্রধানমন্ত্রী আলেমগণকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ফলে আর্থিক ক্ষতি মোকাবেলায় মাদরাসাগুলিকে সুদমুক্ত ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা প্রস্তুতের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেবেন। তিনি আরও যোগ করেন, তিনি তার অর্থনৈতিক পরামর্শদাতাদের মুফতি তকী উসমানী এবং মুফতি মুনিবুর রেহমানের ‘সুদমুক্ত অর্থনীতি’র পরামর্শটি গুরুত্বের সাথে দেখতে বলেছেন। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী মসজিদ ও মাদরাসার জন্য ইউটিলিটি বিলগুলোতে আর্থিক শিথিল করার বিষয়ে একমত হয়েছেন বলে তিনি প্রকাশ করেছেন।
বৈঠকের পরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ওয়াফাকুল মাদারিস আল-আরবের মাওলানা হানিফ জলন্ধরী জানান যে, প্রধানমন্ত্রী চলমান লকডাউন চলাকালে বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের জন্য গ্রেফতার ধর্মীয় নেতা এবং অন্যদের মুক্তি দিতে রাজি হয়েছেন। পরিবর্তে, প্রধানমন্ত্রী স¤প্রতি প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির ঘোষিত রমজানের সময় অনুসরণ করার জন্য ২০-দফা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য আলেমগণকে অনুরোধ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট স¤প্রতি রমজানের সময় জামায়াত ও তারাবিহ’র জন্য একটি পরিকল্পনা গঠনের জন্য আইওয়ান-ই-সদরে বিশিষ্ট উলামা ও ধর্মীয় নেতাদের সাথে বৈঠক করেন।
‘রমজান একটি ইবাদতের মাস এবং মুসলমানরা এই মাসকে অনেক বেশি ভালবাসে। যে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সরকারের সুপারিশ এবং ওলামার সুপারিশ সংগ্রহ করা জরুরি ছিল, ‘প্রেসিডেন্ট ২০-দফা পরিকল্পনার রূপরেখার সময় বলেছিলেন।
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. জাফর মির্জা, এরই মধ্যে করোনভাইরাস সম্পর্কে তার দৈনিক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যদি রমজানের সময় নির্দেশনাগুলো অনুসরণ না করা হয় তবে মসজিদগুলি কোভিড-১৯ হটস্পট হয়ে উঠতে পারে।
জাফর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘রমজানে যখন সব মুসল্লি ঘন ঘন মসজিদগুলোয় আসবেন তখন প্রেসিডেন্টের বর্ণিত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত’। আলেমগণ প্রধানমন্ত্রীকে এক্ষেত্রে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন