টাঙ্গাইলের সখিপুরে নিখোঁজের ১৮ঘন্টা পর সুজন আহমেদ (১১) নামের এক স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। শনিবার দুপুরে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের গড়বাড়ী গ্রামের একটি ডোবায় ভাসমান অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সুজন ওই গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আন্নাছ আলীর ছেলে এবং গড়বাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। শনিবার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, শুক্রবার গড়বাড়ি বাজারে কলা বিক্রির পর বিকেলে সুজন তার সমবয়সী আবদুল্লাহ, রুবেলসহ কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ঘুঁড়ি উড়াতে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে সে আর বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবার ও এলাকাবাসী মিলে রাতভর অনেক খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি। আজ শনিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে মাইকিং করা হয়। গ্রামের মানুষ দলবেঁধে পুকুর ডোবা খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে বখতিয়ার পাড়ার একটি পুকুর সদৃশ ডোবায় ভাসমান অবস্থায় সুজনের লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে পাঠায়।
এ ব্যাপারে কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুত বলেন, নিহত শিশুর বাবা-মা জানিয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যার পর তার ছেলে সুজন নিখোঁজ হন। শত্রুতা করে কেউ তার সন্তানকে হত্যা করে ডোবায় ফেলে রেখে গেছে বলে তাদের ধারণা।
ওই ডোবা থেকে ওই স্কুলছাত্রের বাড়ি আধা কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর কোণে।
শিশুটির শরীরে হালকা পাতলা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
সখিপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বদিউজ্জামান বলেন- লাশের প্রাথমিক সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসলে বলা যাবে এটি পানিতে ডুবে মৃত্যু নাকি হত্যাকা-।
কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, শুক্রবার বিকেলে দীঘির চালা গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ একটি ঘুঁড়ি উড়ার সময় সুতা ছিঁড়ে যায়। সুজন ওই ঘুড়িটি খুঁজে পায়। ঘুড়িকে কেন্দ্র করে এক পর্যায়ে সুজন ও ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর মধ্যে ঝগড়া বাধে। ওই গ্রামের বাহাদুর নামে একজন ঝগড়ার মীমাংসার চেষ্টা করে। সন্ধ্যায় সুজন বাড়ি না ফেরায় তার বাবা-মা শুক্রবার রাতভর খোঁজাখুঁজি করে। আজ শনিবার(২৫.০৪.২০২০) সকালে স্থানীয় লোকজন ওই ডোবায় লাশটি ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। সুজনের বাবা আন্নাছ আলী বলেন,আমার ছেলে সাঁতার কাটতে জানে সে পানিতে ডুবে মরতে পারে না। কেউ ওকে মেরে পানিতে ফেলে দিয়েছে।
সখিপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এএইচএম লুৎফুল কবির বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে লাশের গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন