রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

চাঁদপুরে একজন প্রবাসীরও করোনা শনাক্ত হয়নি, কমিউনিটি ট্রান্সমিশনে বিস্তার

চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২০, ১১:৩৩ এএম | আপডেট : ১১:৩৯ এএম, ৮ মে, ২০২০

করোনা সংক্রমণের উৎস হিসেবে বিদেশ ফেরতদের চিহ্নিত করা হলেও চাঁদপুরে আসা ৫ সহস্রাধিক প্রবাসীর একজনেরও করোনা শনাক্ত হয়নি। স্থানীয় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বদ্ধমূল ধারণা, বাংলাদেশে করোনার হটস্পট খ্যাত নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে আসা আক্রান্তর মাধ্যমেই চাঁদপুরে করোনার সংক্রমণ ও বিস্তৃতি ঘটেছে।
চাঁদপুরে বিদেশ প্রত্যাগতদের হোম কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে গত ১০ এপ্রিল। এক মাস পরও জেলায় কোনো প্রবাসী করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হননি। বিদেশ ফেরত প্রচুর লোক আসলেও নমুনা পরীক্ষার হার ছিল একেবারেই নগণ্য। মার্চের শুরু থেকে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় মাত্র ২জনে প্রবাসীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাও সেই দু’জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের আসার পর তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন ইতালি ফেরত ছিলেন। তাদের দু’জনের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ এসেছিল।

আক্রান্তদের একাংশ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ফেরত, কিছু অংশ স্থানীয় শনাক্তদের সংস্পর্শে আসা। এ ক্ষেত্রেও স্থানীয় চিকিৎসকদের ধারণা, নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা ফেরতদের মাধ্যমে চাঁদপুরে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনও শুরু হয়েছে। চাঁদপুরে যে ৪জন করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় মারা গেছেন বলে শনাক্ত হয়েছেন তাদের একজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ফেরত। বাকী ৩জনের প্রবাসী/অন্য জেলার লোকের সংস্পর্শে আসার কেইস স্টোরি নেই।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, গত ১ মার্চ থেকে জেলায় বিদেশ প্রত্যাগত লোকের সংখ্যা ৫ হাজার ১৪৬জন। এর মধ্যে ৪ হাজার ১০৮জনের ঠিকানা ও অবস্থান সনাক্ত করতে পেরেছে তারা। প্রশাসন বলছে, এদের সবার হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে।৬ মে পর্যন্ত বিভিন জেলা থেকে আগত লোকের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬১২জন।

চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেব অনুযায়ী, জেলায় এখন (৭ মে) পর্যন্তমোট শনাক্তকৃত করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৪জন। এর মধ্যে চাঁদপুর সদরে ১৭জন, ফরিদগঞ্জে ৬জন, হাজীগঞ্জে ৪জন, মতলব উত্তরে ৩জন, হাইমচরে ২জন এবং কচুয়ায় ২জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪জন মৃত এবং ১১জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়া মতলব উত্তর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন মনে করেন, তার এলাকায় প্রবাসীদের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ ঘটেনি। অদূরবর্তী নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা লোকেদের মাধ্যমেই করোনার সংক্রমণ হয়। তিনি জানান, তার উপজেলায় শনাক্তকৃত ৩জনের দু’জন নারায়ণগঞ্জ ফেরত এবং অপরজন তাদের চিকিৎসা করতে যেয়ে আক্রান্ত হয়।এই উপজেলায় প্রথম ইতালি ফেরত এক বৃদ্ধ অসুস্থ হলে তার নমুনা টেস্টের রিপোর্ট আসে করোনা নেগেটিভ।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, সদর হাসপাতালে এখনো কোনো প্রবাসী উপসর্গ বা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেননি। তার ধারণা, চাঁদপুরে কোনো প্রবাস ফেরত লোক করোনায় আক্রান্ত হননি, তাদের মাধ্যমে এখানে করোনার সংক্রমণও হয়নি। তিনি মনে করেন, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে আসা লোকজনের মাধ্যমে চাঁদপুরে করোনার সংক্রমণ এবং কমিউনিটি ট্রান্সমিশন।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, সদর উপজেলা এবং ফরিদগঞ্জে এখন সীমিত আকারে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে। ফলে একজন থেকে আরেকজন করোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন। আশঙ্কার কথা হচ্ছে, আক্রান্ত রোগী আমাদের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়া হাজীগঞ্জ উপজেলায়ও কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের পথে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন