দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর আন্দোলন করে আসলেও আজো চাকরি ফিরে পায়নি বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আন্দোলনরত শ্রমিকরা। চাকরি না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করলেও একের পর এক প্রতিশ্রুতির জালে আটকা পড়েছে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া।
গত দুই বছর আগে তাদেরকে দৈনিক হাজিরায় নিয়োগ দেয়ার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়। তবে আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলছেন, স্থানীয় ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী মহলের চাপে নিয়োগ হচ্ছে না তাদের। এদিকে চাকরি হারিয়ে দীর্ঘদিন বেকার হয়ে পড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে চাকরি হারানো শ্রমিকরা।
আন্দোলনকারী শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, চাকুরীর আশায় দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থেকেও চাকরি না পেয়ে তার পরিবার এখন অচল হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়েছে তার ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া। শাহাপুর গ্রামের মাজেদুল বলেন, চাকরির আশায় আশায় শুধু দিন যাচ্ছে কিন্তু চাকরি হচ্ছে না। তাই এখন তাকে পরের বাড়িতে দিন মজুরি করতে হচ্ছে। একই অবস্থা অন্যান্য শ্রমিকদের।
জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট নির্মাণের সময় তাদেরকে তৃতীয় পক্ষের অধীনে চাকরী দেয় কর্তৃপক্ষ। নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হারবীন ইন্টারন্যাশনাল-এর অধীনে শ্রমিকদের উৎপাদন কাজে চাকরি করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু তারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অধীনে চাকরি করার প্রস্তাব দিলে তাদেরকে বাদ দিয়ে বাহির থেকে শ্রমিক এনে উৎপাদন কাজ করার চেষ্টা করে কর্তৃপক্ষ। এরই প্রতিবাদে গত ২০১৭ সাল থেকে তারা আন্দোলনে রয়েছেন।
শ্রমিক আন্দোলন পরিচালনাকারী কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমতিতে গত ২০১৮ সালে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নিয়োগের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু স্থানীয় একটি ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী মহলের চাপে সেই নিয়োগটি আজও দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, আন্দোলনরত শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরায় কাজে নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন আছে কাজ শুরু হলে তাদের নেয়া হবে জানিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের চাপের কথা এড়িয়ে যান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন