শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মিলছে না শয্যা আইসিইউ অক্সিজেন

চট্টগ্রামে উপসর্গ মৃত্যু বাড়ছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর মারা যান অর্ধেন্দু দে (৬৫)। তার আধা ঘণ্টা আগে মারা যান মোহাম্মদ আলী (৬০) নামে আরও একজন। গতকাল মঙ্গলবার ওই হাসপাতালের আইসিইউতে তাদের মৃত্যু হয়। হাসপাতাল থেকে বলা হয় তাদের করোনা উপসর্গ ছিলো। সাথে ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন।

করোনা শনাক্ত না হওয়ার পরও তারা হাসপাতাল এমনকি আইসিইউ পর্যন্ত যেতে পেরেছেন। তবে একেবারে শেষ সময়ে। আর অনেকে সে সুযোগও পাচ্ছেন না। উপসর্গের সাথে প্রচÐ শ^াসকষ্ট নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটতেই প্রাণ যাচ্ছে। সীতাকুÐের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিমের (৬৫) ছেলেরা সোমবার পাঁচটি হাসপাতালে আকুতি মিনতি করেও তাদের বাবাকে ভর্তি করাতে পারেন নি।

বলা হয়, আইসিইউ নেই, অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়ারও ব্যবস্থা নেই। অবশেষে তারা চমেক হাসপাতালে যান। সেখানে ভর্তি করা হলেও আইসিইউ কিংবা অক্সিজেন দেয়া যায়নি। হাসপাতালে সিলিন্ডার সঙ্কট বলার পর তারা নিজেরাই সিলিন্ডার কিনে আনেন। ততক্ষণে তিনি মৃত্যুর কোলে।

চট্টগ্রামে প্রতিদিনই এমন অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। উপসর্গ নিয়ে মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালে শয্যা নেই, আর বেসরকারি হাসপাতাল এখনও এমন রোগী নিচ্ছে না। যাদের হাসপাতালে যাওয়ার মতো অবস্থা নেই তারা বাসা বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন।
সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যু একশ পার হয়েছে। তবে উপসর্গ নিয়ে তার চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। উপসর্গ থাকার পরও মানুষ করোনা টেস্ট করার সুযোগ পাচ্ছে না। দুটি ল্যাবে সাড়ে তিন হাজারের বেশি নমুনা পড়ে আছে। এক সপ্তাহ পরেও রিপোর্ট মিলছে না। রিপোর্ট না পাওয়ায় উপসর্গ নিয়ে যাদের অবস্থা জটিল হচ্ছে তারা চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসা ছাড়া মৃত্যুর তালিকায় চট্টগ্রামের ধনাঢ্য শিল্পপতিদের নামও আছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ করোনা হাসপাতালে নেওয়া হলে বলা হচ্ছে রোগীর চাপে শয্যা খালি নেই। ভর্তির পরও অনেকে চিকিৎসা বিশেষ করে অক্সিজেন ও আইসিইউর অভাবে মারা গেছেন। স্বজনের সামনে অসহায় মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলছে।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীতে হিমমিশ। এরপরও জেনারেল হাসপাতাল এবং চমেক হাসপাতালে উপসর্গ যাদের আছে তদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও রোগীর প্রচÐ চাপ। তবে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি। হাসপাতালে শয্যা বাড়ছে। আইসোলেশন ওয়ার্ডও চালু হচ্ছে। তখন সঙ্কট থাকবে না। নতুন করে আরো ৯৯ জনসহ চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ১৭২ জন।

এদিকে গতকাল ইউএসটিসিতে করোনা চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একশ শয্যার এ হাসপাতালে পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা হবে। শয্যা খালি থাকলে অন্যরাও চিকিৎসার সুযোগ পাবেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন