একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাণ। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রমে অন্যতম ভূমিকা রাখে সংগঠনগুলো। অপরদিকে স্বাস্থ্য সেবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের গুরুত্বও অন্যতম। স্বাস্থ্য সেবার দিকে গুরুত্ব দিতে জবির ক্রিয়াশীল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের অফিস বন্ধ করে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এক অনলাইনসভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ফলে শিক্ষার্থীদের বাসা ভাড়া সংকট নিরসন ও চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৫ দফা দাবির পরেই এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য সেবার মেডিকেল সেন্টারটি অনেক ছোট তাই মেডিকেল সেন্টারটি সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনের ২য় ও ৩য় তলার সামাজিক ও ক্রিয়াশীল সংগঠন সমূহের অফিস কক্ষ সরিয়ে এখানে মেডিকেল সেন্টারটি সম্প্রসারিত করা হবে। এখানে মেডিকেল সেন্টার করা হলে, ক্রিয়াশীল সংগঠন সমূহের অফিস কক্ষ কোথায় যাবে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এখন যেহেতু ক্যাম্পাস বন্ধ সংগঠনসমুহের কার্যক্রম নাই তাই এখানে মেডিকেল সেন্টার করা হবে। আর সংগঠনসমুহের অফিসকক্ষ কোথায় হবে এটা নিয়ে ভিসি স্যারের একটা পরিকল্পনা আছে উনি ভাল বলতে পারবেন।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশনকৃত ক্রিয়াশীল ১৯টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনের ২য় তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ, রোভার স্কাউট, রেঞ্জার ইউনিট,বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টাস ইউনিটি এর অফিস কক্ষ। ৩য় তলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জবিসাস),ডিবেটিং সোসাইটি,বিএনসিসি,চলচিত্র সংসদ,ফটোগ্রাফিক সোসাইটি এবং ৪র্থ তলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র,আবৃত্তি সংসদ,উদিচী ও প্রেসক্লাবের অফিস কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে নতুন করে রেজিস্ট্রেশনকৃত আইটি সোসাইটি,মাইম সোসাইটি,সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি,রঙ্গভূমি ও মুক্তমঞ্চ পরিষদের কোন অফিস কক্ষ নেই। যাদের অফিসকক্ষ আছে সেগুলোর আয়তন ছোট হওয়ায় সেখানে অনেক সংগঠনের নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনা করার জায়গা থাকে না। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সিন্ধান্তে ২০১৯ সালে অবকাশ ভবনের ৪র্থ তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের অফিস কক্ষ ভাগ করে সেখানে কিছু অনলাইন সাংবাদিকদের সংগঠন প্রেসক্লাবকে জায়গা দেয়া হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এর বিরোধীতা করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি আমলে নেয়নি। একই বছর তথাকথিত সাংবাদিকদের সংগঠন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোটার্স ইউনিটিকে রোভার স্কাউটের কক্ষ ভাগ করে সেখানে তাদের জায়গা করে দেয়া হয়। জানা যায়, এ সংগঠনটির স্বঘোষিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোন জাতীয় পত্রিকা বা অনলাইনের প্রতিনিধি না হলেও শুধুমাত্র ভিসি ও তার সহধর্মিণীর ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করার কারণে কক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রেশনকৃত ক্রিয়াশীল অন্যান্য সংগঠন কক্ষ বরাদ্দ চাইলেও তাদের দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ইনকিলাবকে বলেন, মেডিকেল সেন্টার অবকাশ ভবনে স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অবকাশ ভবনের অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা হবে। আগামী একমাসের মধ্যে নতুন একজন ডাক্তারসহ বেশ কিছু টেকনিশিয়ান নিয়োগ করা হবে। সংগঠনগুলোর অফিস কোথায় নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি প্রজ্ঞাপন দেখতে বলেন। যদিও এ ব্যাপারে কোন প্রজ্ঞাপন এখনো জারি হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন