দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে গ্রামীণ সড়কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা এখন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সড়কের ডিজাইন লাইফ ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছে। এসব সড়কের পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় ক্রমশ যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরী হাট ভোলা-বরিশাল সড়কের ১০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। পুরো রাস্তায় খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত। অল্প বৃষ্টিতেই হাটু সমান পানি জমে যায়। যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় ভোগান্তির শিকার দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন চালকরা। দীর্ঘদিন মেরামত না করায় ঘটছে দুর্ঘটনাও। যানবাহন ধীর গতিতে চলার ফলে চট্টগ্রাম-সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আশা মানুষ সময় মতো ফেরি ও লঞ্চ না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হয়। একই সাথে মজুচৌধুরী হাট ব্যবসায়ী কেন্দ্র হওয়ায় চলাচল করছে ছোট-বড় কয়েক শতাধিক গাড়ি। মেঘনার ইলিশ, শাক-সবজি, ধানসহ বিভিন্ন ফসল এই সড়ক দিয়েই সরবরাহ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত বলেন, ১৮ ফিট রাস্তা অচিরেই ৩৬ ফিট হবে। দ্রুত সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা এলাকার এক হাজার কিলোমিটারের অধিক সড়কে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। কোনো কোনো সড়কে স্বাভাবিক চলাচলও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এসব সড়কের কোনোটি সংস্কারের এক বছরের মধ্যে ফের বেহাল হয়ে পড়েছে। কোনটি এক যুগেরও অধিক সময় ধরে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে না। কুমিল্লায় জেলায় ১০ হাজার ২শ’ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার পাকা সড়কের সাড়ে ৫শ’ কিলোমিটারের অবস্থা বেহাল। জেলার গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ স্থানের সড়কগুলোতে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। কাঁচা-পাকা মিলিয়ে জেলার এক হাজার কিলোমিটারের অধিক সড়ক ভাঙাচোরা।
জেলা সদর ছাড়াও সদর দক্ষিণ, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, বরুড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, দেবিদ্বার, দাউদকান্দি, হোমনা, মেঘনা, তিতাসসহ বিভিন্ন উপজেলা সদর, পৌর এলাকা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমপক্ষে এক হাজার কিলোমিটারের অধিক সড়ক সংস্কারের অভাবে ইট-সুরকি উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কুমিল্লায় কর্মরত একজন সরকারি কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গ্রামের সড়কগুলো দীর্ঘদিন মেরামত না করা ও অতিরিক্ত গাড়ির চাপ ও বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলার মেঘনা উপজেলার অভ্যন্তরীণ রাস্তাগুলো খানাখন্দের কারণে বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। তিতাস সদর কড়িকান্দি-মজিদপুর সড়কে জনদুর্ভোগ চরমে গিয়ে পৌঁছেছে। কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাস্তাগুলোতে বর্ষা মৌসুমে গর্তের সৃষ্টি হয়। অর্থাভাবে মেরামত বা সংস্কার করা যাচ্ছে না। কাঁচাসড়কগুলোর অবস্থা আরো করুণ। বর্ষাকালে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বছরে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় তা দিয়ে মেরামত সম্ভব হয় না। জেলার এমন অনেক সড়ক আছে নির্মাণের পর আর মেরামত বা সংস্কার করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন