নিউইয়র্কের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত হয়ে নিউইয়র্ক নগরী এখন আরেক সংকটের সম্মুখীন। গত এক মাস ধরে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। নগরীতে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে অপরাধ। অস্ত্র–সহিংসতা অতীতের রেকর্ড ছড়িয়ে গেছে। শুধু শনিবার ও রোববার দিনগত রাতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ৪১জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটিজুড়ে রাতারাতি ঘটে যাওয়া এই সহিংস ঘটনা তদন্তে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে।
রোববার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে প্রথম গোলাগুলির ঘটনা ঘটে ব্রুকলিনের ইস্ট নিউইয়র্কে। ২০ বছর বয়সী যুবক নিজ বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ ওই যুবককে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ম্যানহাটনের হারলামে রাত ২টা ৪০ মিনিটে ২৩ বছর বয়সী আরেক যুবক গুলিবিদ্ধ হলে নিজে হাসপাতালে যাওয়ার ১ মিনিট পর মারা যান। ব্রুকলিনের ফ্লাটবুশে ১৯ ও ২৭ বছর বয়সী দুইজন রাত ৪টা ২০ মিনিটে গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের কিংস কাউন্টি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৯ বছর বয়সী তরুণ মারা যান। আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঠিক ৪০ মিনিট পর ব্রুকলিনের ব্রাউন্সভিলে ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর অবস্থায় গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে নিকটবর্তী ব্রুকডেল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া ব্রুকলিনে ২২ ও ২৩ বছর বয়সী আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে একজন নারী রয়েছে। তবে এসব ঘটনায় কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে, ৫ জুলাই সকালে ম্যানহাটনের ইনউড বিভাগে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এসব সহিংসতার ঘটনায় কুইন্সে একজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর দিকে রুজভেল্ট অ্যাভিনিউ এবং ৫২ স্ট্রিট সাবওয়ে স্টেশনে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় আরও একজনকে আটক করা হয়েছে।
গত ২৫ মে মেনিয়াপোলিসে পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড নিহত হন। এর প্রতিবাদে আমেরিকায় নাগরিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি নাগরিকের বিশ্বাস ও পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। নিউইয়র্কে এ আন্দোলনের সুযোগে ব্যাপক লুটতরাজ হয়েছে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নিউইয়র্ক রাজ্য ও নগরী পুলিশ সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করে। নিউইয়র্কের অনেক পুলিশ স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। জর্জ ফ্লয়েড হত্যার পর থেকে গত ২৩ জুন পর্যন্ত ২৭২ জন এনওয়াইপিডির কর্মকর্তা ইতিমধ্যে অবসরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন