দুপচাঁচিয়া উপজেলার নান্দনিক সৌন্দর্যের শান্তির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহিলা (বিশ্বঃ) কলেজ স্বমহিমায় শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে সুনাম ও ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে এদেশের অবহেলিত দরিদ্র ও অসহায় নারীদের উচ্চশিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। শ্রেষ্ঠ কলেজের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই প্রতিষ্ঠানটি অবকাঠামোসহ সামগ্রিক সবকিছু বিদ্যমান থাকায় কলেজটি জাতীয়করণের দাবি রাখে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
এসএসসি পাঠ চুকিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে ¯œাতক পর্যন্ত নারী শিক্ষার আলাদা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় উপজেলার নারী শিক্ষা ছিল অনেকটাই পিছিয়ে। সময়ের পরিক্রমায় এলাকাবাসী ও তৎকালীন টিএনও আব্দুল জলিল মিঞার উদ্যোগে ১৯৯৩ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগী ও বিশিষ্ঠ ব্যক্তিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অনেক বাধা-বিঘœকে অতিক্রম করে বিস্তীর্ণ এই এলাকার নারী সমাজকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুপচাঁচিয়া মহিলা কলেজ নামে স্থাপিত হয় এই বিদ্যাপীঠ। উপজেলা ক্যাম্পাসের পশ্চিম পার্শ্বে নির্জনÑনীরব, সবুজ-ছায়ায় ঘেরা মনোরম পরিবেশে ২ একর ৯৬ শতাংশ জায়গার উপর কলেজটি অবস্থিত। কলেজ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, বর্তমানে কলেজটিতে এইচএসসি, এইচএসসি বিএম শাখা, ডিগ্রিসহ ২০০৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬টি অনার্স কোস চালু রয়েছে। আরো ১টি অনার্স কোস চালুর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা নারী শিক্ষার অগ্রদূত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আলহাজ আব্দুল মজিদ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর উপাধ্যক্ষ আখতারুন নেছা কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে কলেজটিতে তিনিসহ ৬৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। অধ্যয়নরত মোট ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৮৫০ জন। বর্তমানে কলেজটিতে দ্বিতল ও তৃতীয় তলাবিশিষ্ঠ ৫টি ভবন রয়েছে। এদের মধ্যে কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে বেগম রোকেয়া ভবন, কবি নজরুল ইসলাম ভবন, কবি রবীন্দ্রনাথ ভবন, কবি সুফিয়া ভবন, এবং সরকারি অর্থায়নে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ভবন। কবি রবীন্দ্রনাথ ভবনের দ্বি-তলায় সিডার অর্থায়নে স্থাপিত হয়েছে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরিতে প্রায় ৮ হাজার বই রয়েছে। এছাড়াও কলেজে তিনটি বিভাগীয় লাইব্রেরি রয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাসেই ছাত্রীদের থাকার জন্য একটি ছাত্রীনিবাস রয়েছে। ৫০ থেকে ৬০ জন ছাত্রীর থাকাসহ খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। গত বৃহস্পতিবার কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল আখতারুন নেছা একান্ত এক সাক্ষাৎকারে “দৈনিক ইনকিলাব”-কে জানান, কলেজটির গভর্নিং বর্ডির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. নুরুল ইসলাম তালুকদারসহ অন্যান্য সদস্যদের অক্লান্ত চেষ্টায় সাফল্যতার সিঁড়ি বেয়ে আজ এই উচ্চ মাধ্যমিক কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পরিণত হয়েছে। তিনি আরো জানান, অভিভাবক ও ছাত্রীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলও ভালো। ২০০১ সালে ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষায় এই কলেজটি রাজশাহী বিভাগের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে। তিনিসহ কলেজের সকল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা কলেজটি জাতীয়করণের পক্ষে একমত পোষণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
ষ মো. গোলাম ফারুক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন