মুমূর্ষদের জীবন বাঁচাতে আমরা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বেচ্চায় রক্তদান কারী একটি সংগঠন ‘বন্ধু’। বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল স্বাস্থ্যসচেতন সমাজসেবী তরুণ এই সংগঠনটি গঠন করেন। যারা পড়াশুনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায়, আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল এবং মুমূর্ষ মানুষকে রক্ত দিতে কাজ করে যাচ্ছেন নিরলস ভাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেও দ্বারা পরিচালিত সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য মুমূর্ষ রোগী, গর্ভবতী মাকে রক্তদান, রক্তদানে সক্ষম প্রতিটি মানুষকে রক্তদানে উৎসাহ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণ। শুরুতে কয়েক জন তরুণ ব্যাক্তিগত ভাবে কাজ শুরু করেন। কাজ করতে গিয়ে ৯-১০ জন বন্ধু ও সিনিয়র ভাইদের সাথে পরিচিত হলে তারা একত্রে কাজ করেন। পরে তারা একটি সংগঠন করেন এবং এর নাম দেন ‘বন্ধু’। মুমূর্ষ রোগীর পাশে তারা বন্ধুর মত রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন । তাই তার নাম রেখেছেন ‘বন্ধ’ু। বলছিলেন সংগঠনের একজন কর্মী।
২০১২ সাল থেকে কাজ করলেও ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ‘যদি করি স্বেচ্চায় রক্ত দান, বাঁচবে জীবন বাঁচবে প্রাণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে তারা সাংগঠনিক ভাবে কাজ শুরু করেন। এখন সংগঠনটি সদস্য সংখ্যা ২৭০ জন। বর্তমান কার্যনিবাহী কমিটিতে আছেন ২৩ জন। প্রত্যেক মাসে রক্ত দিচ্ছেন ১৫০ থেকে ২০০ ব্যাগ। ‘২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রক্ত দিয়েছে ৫০০- ৬০০ ব্যাগ।’ বলছিলেন বন্ধুর সভাপতি আইনুন নিশাত চেšধুরী। ইতোমধ্যে তারা তৈরি করেছেন সংগঠনের আইডি কার্ড । এই কার্ডের মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক গ্রুপের আলাদা ভাবে যারা কাজ করেন তাদের প্রত্যেকের নাম ও মোবাইর নাম্বার। এটি বিতরন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল শিক্ষার্থীদের কাছে। প্রয়োজন হলেই তারা ফোন দেন।’ বলছিলেন সংগঠনের ট্রেজারার মো. আমজাদ হোসেন।
ইতিমধ্যে তারা ক্যাম্পাসে রক্ত সংগ্রহের জন্য দুইবার ক্যাম্প করেছেন। বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দ্বারা বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নিণর্য় করেন। আর এই সুবিধাটি নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। অসংখ্য মুমুর্ষূ রোগীকে বন্ধুর কর্মীরা প্রতিনিয়ত রক্ত দিয়ে যাচ্ছে কোনরূপ আর্থিক লাভ ও শর্ত ছাড়াই। বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া, জ-িস, এবং গর্ভবতী মায়েদের সিজারের সময়।
‘প্রতি চার মাস অন্তর অন্তর রক্ত দিলে লোহিত রক্তকনিকার প্রাণবন্ততা বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে দৈহিক উদ্যোম ও কাজে কর্মে স্পৃহা বাড়ে।’ এমনটাই বলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ। তিনি আরও বলেন, ‘রক্তদান একটি মানবীয় কাজ। যেটি শুধু রক্ত দান করার মাধ্যমেই সম্ভব। তাছাড়া রক্ত দান করলে দেহে রোগ প্রতিরোদ ক্ষমতা বাড়ে।’
সংগঠনের সভাপতি আইনুন নিশাত চৌধুরী বলেন, ‘রক্তদান করার মধ্যে একটি স্বর্গীয় সুখ পাত্তয়া যায়। আমাদের দেহের রক্ত কনিকা গুলো তিন মাস পরপর এমনিই নষ্ট হয়ে যায়। যদি মানুসকে রক্তদান সম্পর্কে সচেতন করা যায় তাহলে রক্তদানের মাধ্যমে অনেক মানুষকে বাঁচানো সম্ভব।’
ষ এস এম জুবায়ের
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন