খুলনা, সাতক্ষীরা ও বান্দরবানে পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল (৫২), বান্দরবানের মো. শাহ আলম, সাতক্ষীরা সদরের লিয়াকত আলী। এছাড়া মৌলভীবাজারে বিজিবির গুলিতে বদরুল ইসলাম (২২) নামে এক চোরাকারবারি নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে রিভলবার, দেশি বন্দুক, কয়েক রাউন্ড গুলি, ছুরি, ৪০ হাজার ২শ’ পিস ইয়াবা, ২ লাখ পিস ভারতীয় নাসির বিড়ি ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা সবাই বিভিন্ন মামলার আসামি বলে দাবি করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত :
খুলনা : খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ওরফে মিনা কামাল (৫২) র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোরে বাগেরহাটের রামপাল থানাধীন খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ভেকুটিমারি এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। র্যাব-৬ এর অধিনায়ক রওশনুল ফিরোজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে রামপালের ভেকুটিমারি এলাকায় অভিযানে যান। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর গুলি চালালে তারাও পাল্টা গুলি চালান। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ কামালকে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে পিস্তল, গুলি, ছুরি ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত কামালের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ২৫টি মামলা রয়েছে।
বান্দরবান : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে পুলিশের সঙ্গে গতকাল ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. শাহ আলম নামে এক ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় বন্দুক, ৪০ হাজার পিস ইয়াবা এবং ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শহ আলম কক্সবাজারের উখিয়া ১নং কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা থেকে শাহ আলমকে আটক করা হয়। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে নিয়ে সীমান্তে অভিযানে গেলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা মাদক কারবারিদের সঙ্গে গুলি বিনিময় হয়। এ সময় শাহ আলম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহ ইউনিয়নের কয়ারবিলে দু’পক্ষের ‘গোলাগুলিতে’ লিয়াকত আলী নামে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লিয়াকত আলী সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামের মৃত মোসলেম আলী সরদারের ছেলে। তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সাতক্ষীরা সদর থানায় তার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর্জা সালাউদ্দীন জানান, ভোরে কয়ারবিল এলাকায় দুই পক্ষের গোলাগুলি চলছে এমন সংবাদে সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। তিনি বলেন, এ সময় তার পাশে একটি রিভলবার, দুই রাউন্ড গুলি, একটি হাসুয়া, ৫০ বোতল ফেনসিডিল ও ২০০ পিস ইয়াবা পড়ে ছিল। তাৎক্ষণিক গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিজিবির গুলিতে বদরুল ইসলাম (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। নিহত যুবক একজন চোরাকারবারি। ঘটনাস্থল থেকে ২ লাখ পিস ভারতীয় নাসির বিড়ি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু বলেন, ভোরে উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের মনু নদে নির্মাণাধীন রাজাপুর ব্রিজের পার্শ্ববর্তী শুখনাভী চরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বদরুল ইসলাম (২২) হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের আত্তর আলীর ছেলে।
বিজিবির আলীনগর ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, ভারত থেকে চোরাকারবারিরা নাসির বিড়ি নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এমন গোপন খবরের ভিত্তিতে বিজিবি আগে থেকেই ঘটনাস্থলে ওৎ পেতে ছিল। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে চোরাকারবারিরা নৌকাযোগে বিড়ি নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে নৌকা থেকে বিড়ি নামাচ্ছিল। এ সময় বিজিবি বাঁশি বাজালে তারা বিড়ি রেখে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরা বিড়ি উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসতে চাইলে চোরাকারবারিরা তাদের দলবল নিয়ে এসে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বিজিবির ওপর হামলা করে ও বিড়িগুলো নিয়ে যেতে চায়। এমনকি ৫০ হাজার পিস বিড়ি নিয়েও যায়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি এক রাউন্ড গুলি করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন