শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

১৪৪২ হিজরি কীভাবে কাটবে তা নিয়ে ফিকির করতে হবে

জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

১৪৪১ হিজরী সাল আমরা কীভাবে কাটিয়েছি তা নিয়ে চিন্তা এবং আসন্ন ১৪৪২ হিজরী সাল আমরা কীভাবে কাটাবো তা নিয়েও ফিকির করতে হবে। করোনা মহামারির পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া ঈমানী দায়িত্ব। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম ও খতীবরা এসব কথা বলেন। যথাযথ সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদগুলোতে ব্যাপক মুসল্লির সমাগম ঘটে। মসজিদে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় রাস্তার ওপরও মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করেন। নগরীর মহাখালিস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মুসল্লিরা জুমা আদায় করেন।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতী মুহিব্বুল্লাহিল বাকি নদভী খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, যদি জিলহজ মাস ২৯ দিনে হয় তা হলে ১৪৪১ হিজরীর আজকেই শেষ জুমা। বিগত ১৪৪১ হিজরীর পুরো বছরটি কীভাবে আমরা কাটিয়েছি সে সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। আসন্ন ১৪৪২ হিজরী সাল আমাদের কীভাবে কাটবে তা নিয়েও ফিকির করতে হবে। তিনি বলেন, পবিত্র আশুরা সমাগত। ঐতিহাসিক কারবালার ময়দানে রসূল (সা.) দৌহিত্র হযরত হুসাইন (রা.)সহ তার পরিবারের ৭১ জন সদস্য দুনিয়ায় হক প্রতিষ্ঠ এবং অন্যায়ের প্রতিবাদের জন্য শহীদ হয়েছেন। তার সফরসঙ্গীরাও শহীদ হয়েছেন। কারবালার লোমহর্ষক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবন পরিচালিত করতে হবে।

ঢাকার ডেমরার ঐতিহ্যবাহী দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদে গতকাল খুৎবা-পূর্ব বয়ানে মাওলানা মো. ফরিদ বিন আব্দুল আউয়াল ফরিদগঞ্জী বলেন, হযরত ওমর (রা.) তাঁর খেলাফতের ৪র্থ বছরে হযরত আবু মুসা আশ‘আরি (রা.)-এর অনুরোধে হযরত আলী (রা.)-এর পরামর্শে মজলিসে শূরার সর্বসম্মতিক্রমে হিজরী সাল গণনা শুরু করেন। হিজরী সাল হচ্ছে চন্দ্র বছর গণনা। তিনি বলেন, হিজরী সালের সাথে ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত তথা রোজা, ঈদ, পবিত্র হজ, শবেবরাত, শবেকদর, মহিলাদের ইদ্দত গণনা, ঈদে মিলাদুন্নবীসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সম্পৃক্ত। এ জন্য হিজরী সাল গণনা করা ফরজে কেফায়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মো. বিন বখতিয়ার খিলজীর (রহ.)-এর বঙ্গ বিজয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে হিজরী সাল গণনা শুরু হয়। পেশ ইমাম বলেন, গত বছরের (১৪৪১ হিজরী) অন্যায়ের জন্য যারা তাওবা করবে এবং আগামী বছর ভাল কাজ করার দৃঢ ইচ্ছা পোষণ করবে তাদের জন্য হলো শুভ নববর্ষ। এ জন্য পরিবারের দায়িত্ব আমল আখলাক এবং সন্তানদের পড়া লেখার হিসাব নিয়ে নতুন বছরের জন্য ভালভাবে প্রস্তুতি নেয়া।

নগরীর চকবাজার ইসলামবাদ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানের বলেন, ভ্যাকসিন নিলেই করোনা মহামারি থেকে মুক্তি নিশ্চিত এমন ধারণা পোষণ করা ঈমান পরিপন্থী। উপাদান ও উপকরণ অবলম্বন ইসলামে দোষণীয় নয় তবে উপাদান নির্ভরতা ঈমানের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। মুমিন নর-নারীকে সর্বদাই এই বিশ্বাসের ওপর থাকতে হবে যে, মহান আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোন কিছুই হয় না এবং হতে পারে না। সর্বক্ষেত্রে কর্তৃত্ব ও রাজত্ব একমাত্র আল্লাহরই।

সুতরাং সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমত ও সাহায্য ছাড়া বিপদমুক্ত হওয়া বা থাকা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। তিনি বলে, নমরুদের প্রজ্জলিত ভয়াবহ অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েও হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সম্পূর্ণরূপে অক্ষত ও নিরাপদ থাকার দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, উপকরণ উপাদানের নিজস্ব কোন কর্তৃত্ব নেই। তাই যে কোন বিপর্যয় ও বিপদ থেকে মুক্তি পেতে মুমিনকে সর্বাগ্রে মহান আল্লাহরই শরণাপন্ন হতে হবে।
সাভার সিটি সেন্টার জামে মসজিদের খতীব আবু ইয়াহয়া জাকারিয়া আল হুসাইনী জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে সূরা আনআম থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যারা ঈমান এনেছে এবং ঈমানের সাথে শিরকের মিশ্রণ ঘটেনি, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত। এ আয়াতের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে পৃথিবীতে লাখের উপরে নবী-রসূল পাঠিয়েছেন এবং সকল নবীর দাওয়াতের মূল বিষয় ছিলো তাওহীদ। তথা আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো ইলাহ নেই। ঈমানী তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমেই দুনিয়া আখেরাতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

আরমানিটোলা শাহী জামে মসজিদে জুমা-পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, মুসলমানদের ভূমিতে অবৈধ দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমঝোতা চুক্তি মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত করেছে।

কামরাঙ্গীরচর হাফেজ্জী হুজুর মাদরাসা মসজিদে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী জুমার বয়ানে বলেন, রাসূলের (সা.) অনুসরণই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের সফলতার চাবিকাঠি।
রাজধানীর মুগদা মানিকনগর ওয়াসা রোডস্থ মদিনা মনোয়ারা জামে মসজিদের খতীব হাফেজ মাওলানা মুফতী জোবায়ের আহমেদ খুৎবার বয়ানে বলেন, করোনা মহামারির পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া প্রত্যেক মানুষের ঈমানী দায়িত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন