ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারির জেরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দিনভর কর্মবিরতি পালনের পর রাতে তা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. তাজওয়ার রহমান খান এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, শনিবার জাতীয় শোক দিবস এবং যা ঘটেছে সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই দুই কারণে ৬০ ঘণ্টার জন্য আমরা কর্মসূচি স্থগিত করেছি। এই সময়সীমা এখন থেকে শুরু হবে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ন কবীর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি স্থগিত করা হয় বলে জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন ইন্টার্ন ডাক্তাররা হোস্টেলে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বাস চেয়েছেন। আমরা সেটা মনিটর করব। আহত দু’জনকে আমরা দেখে এসেছি। তারা ভালো আছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে জুন পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতালের কাজে যোগ দেননি।
জুলাইয়ে ৮০ জন এবং সবশেষ বৃহস্পতিবার ৮৫ জন কাজে যোগ দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের এক পক্ষের মধ্যে বিতণ্ডা ও মারামারি হয়। এর জেরে দুই পক্ষই চকবাজার থানায় অভিযোগ করেন।
পরে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর চকবাজার থানার গুলজার মোড়ে ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. ওসমান গণি এবং ছাত্র সংসদের সাহিত্য সম্পাদক সানি হাসনাইন প্রান্তিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।
হামলার ঘটনায় এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের করা মামলায় ২১ জনকে আসামি করা হয়। তাদের ১১ জনকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শুক্রবার বিকেলে আদালত ঐ ১১ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের হাতে ছিল। সম্প্রতি
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগের অন্য একটি অংশ ক্যাম্পাসে তাদের অবস্থান জোরালো করার চেষ্টা করে।
এ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।
আহত ইন্টার্ন ডক্টরস এসোসিয়েশনের নেতারা সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী এবং বিরোধী পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী।
এর আগে গত ১৪ জুলাই নওফেল ও সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দু’টি হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিতে যান। তারা বেরিয়ে যাওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দুই পক্ষের ১৫ জন আহত হন। পরে পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন