দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণে আরো দুজনের মৃত্যুর সাথে সরকারীভাবে নতুনকরে ৫১ জনের আক্রান্তের খবর দেয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় বরিশালের উজিরপুরে ও বরগুনা সদরে এ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজনেরই বয়স ৭৫ বছর। আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় বরিশাল গত ২৪ ঘন্টা সহ এযাবতকালের শীর্ষেই রয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত সরকারীভাবে ৫৫ জনের মৃত্যু ও দু হাজার ৯২৯ জনের আক্রান্তের কথা বলা হলেও বাস্তবে পুরো দক্ষিণাঞ্চলেই আক্রান্ত আরো বেশী বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহল মহল। বরগুনাতেও ৭৯৯ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ছোট এ জেলাটিতে এখনো মৃত্যুহার জাতীয় পর্যায়ের গড় হারের অনেক বেশী।
তবে শুক্রবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল ও ভোলার পিসিআর ল্যাবে করোনার নমুনা পরিক্ষার সংখ্যা আগের দিনের ৩০৬-এর স্থলে ২৫৯ জনে হ্রাস পেয়েছে। ফলে সনাক্তের সংখ্যাও কমেছে। এ সময়ে বরিশাল শের এ বংলা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ২৪১ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪৬ জনের ও ভোলাতে মাত্র ১৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ জনের করেনা সনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৩৪ জন, আাইসোলেশন ওয়ার্ডে ৪১ জন এবং আইসিউতে ৮জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল।
দক্ষিণাঞ্চলে গত মার্চের শেষভাগ থেকে শুক্রবার (২১ আগষ্ট) দুপুর পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৪৩, আক্রান্ত ৭ হাজার ৫৪। এরমধ্যে মার্চের শেষভাগ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৪৮ জন আক্রান্ত ও ৬০ জনের মৃত্যু হলেও ১জুলাই থেকে ২১আগষ্ট পর্যন্ত ৫২ দিনেই আক্রান্ত হয়েছে আরো ৪,২০৬ জন। এসময়ে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। জুলাইÑআগষ্ট মাস যুড়েই দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ঢেউ অব্যাহত রয়েছে। এরমধ্যে জুলাই মাসের অবস্থা ছিল বেশী নাজুক। ঐ মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা ছিল ২,৬৯৬ এবং মৃত্যু হয় ৫১ জনের। আর চলতি মাসের ২১ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১,২১৯। মৃত্যুর সংখ্যা ২৭। যা গতমাসের একই সময়ে ছিল যথাক্রমে ১,৯২৩ ও ৩৫। তবে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের ধারনা চলতি মাসে এখন পর্যন্ত বিগত মাসের একই সময়ের তুলনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও আত্মতুষ্টির কিছু নেই। কারন বিগত ঈদ উল আজহায় যে কয়েক লাখ মানুষ দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করেছেন,তাদের দ্বারা সংক্রমনের যে ঢেউ সৃষ্টি হবার কথা তা এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি।
এদিকে শুক্রবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে নতুন আক্রান্ত ৫১ জনের মধ্যে বরিশালের সংখ্যাটা ছিল পূর্ববর্তি দিনের ৩২ থেকে ২৭,মৃত্যু হয়েছে একজনের। পটুয়াখালীতে নতুন আক্রান্ত ছিল আগের দিনের ৬ থেকে পাঁচ। তবে জেলাটিতে মোট আক্রান্ত ১,২৩০ জনের মধ্যে ৩৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে। ভোলাতেও আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৬ থেকে ৫ জনে হ্রাস পেয়েছে। জেলায় মোট আক্রান্ত ৬৬২ জনের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু ঘটছে। পিরোজপুরে শুক্রবারে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৭ জনের সমানই রয়েছে। এ জেলাতে ৮৯০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। বরগুনাতে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ১০ থেকে ৬ জনে হ্রাস পেলেও মৃত্যু সংখ্যা আগের দিনের মতই একজন। ফলে জেলাটিতে এপর্যন্ত ৭৯৯ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হল। ঝালকাঠীতে আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ১১ থেকে ৩ জনে হ্রাস পেলেও চার উপজেলার ছোট এ জেলায় ৫৮৪ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে করোনা সংক্রমনে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন