শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৬৮ জনের মুখেই প্রদীপের নাম

এক মাস পর জেল গেটে তদন্ত কমিটির জেরা পুলিশের মামলার তিন সাক্ষীর স্বীকারোক্তি আরো ২ হত্যা মামলার আবেদন ষ যে কোন সময় তদন্ত প্রতিবেদন : তদন্ত কমিটি প্রধান

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রায় একমাস পর অবশেষে মেজর (অব.) সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি প্রদীপ কুমার দাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। গতকাল বুধবার সকালে কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ৪ সদস্য কারাগারে যান। টানা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সিনহা হত্যাকান্ড সম্পর্কে তারা ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জেরা শেষে জেল গেইটেই তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকাÐের সাথে ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টতাসহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন তারা। এ পর্যন্ত তারা ৬৮ জনের সাথে কথা বলেছেন। প্রায় সকলের বক্তব্যে ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার কথা রয়েছে। তারা প্রদীপের সেদিনের ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরেছেন। তদন্ত কমিটি অচিরেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবেন বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, ওসি প্রদীপ সিনহা হত্যার সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়ে রহস্যজনকভাবে নিরবতা পালন করলেও এই মামলার অন্যান্য ১২ আসামী এবিষয়ে রিমান্ডে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই বিষয়ে তারা তদন্ত কমিটির কাছেও স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
তিন সাক্ষীর স্বীকারোক্তিঃ পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছেন আদালতে। ২ সেপ্টেম্বর সোমবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এই তিন আসামীকে আদালতে তোলা হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিচারক তামান্না ফারার আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু হয়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে শেষ হয়। আদালতে স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার পর তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম জানান, আসামিরা রিমান্ডে যা বলেছে আদালতেও তার স্বীকারোক্তি দিয়েছে।

এই তিন আসামী হলেন- টেকনাফ মারিশবনিয়া এলাকার নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মো. আয়াছ। এর আগে আরো দুই দফায় হেফাজতে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাব। ৩য় দফা রিমান্ডে তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এরা সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের করা মামলার সাক্ষী হলেও সিনহার বোনের করা মামলায় তারা আসামী।
আরো দুই মামলার আবেদনঃ টেকনাফে মুছা আকবর (৩৫) ও সাহাব উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তিকে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে একদিনে আরো দদুটি মামলা আবেদন করা হয়েছে আদালতে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (টেকনাফ-৩) হেলাল উদ্দীনের আদালতে এই দুই মামলার আবেদন করা হয়েছে। নিহত মুছা আকবরের স্ত্রী শাহেনা আকতার ও সাহাব উদ্দীনের বড় ভাই হাফেজ আহামদ বাদি হয়ে এই দুই মামলার আবেদন করেন। বাদি পক্ষের আইনজীবি রিদুয়ান আলী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। একটি মামলায় হোয়াইক্যং ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমানকে প্রধান ও প্রদীপ কুমার দাশকে ২নং এবং অন্য মামলায় এসআই দীপক বিশ্বাসকে প্রধান এবং ওসি প্রদীপকে ৩নং আসামী করা হয়। নিহত মুছা আকরের মামলা এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, গত ২৭ ফেব্রæয়ারি পুলিশ হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাইঙ্গ্যা ঘোনা নিহত মুছা আকবরের বড় ভাই আলী আকবরের বাড়ি পুড়িয় দেয় টেকনাফ থানারর একদল পুলিশ এই ঘটনায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পরিবার।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৮ মার্চ রাতে মুছা আকবরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ক্রসফায়ার না দেয়া কথা বলে মুছার পরিবারের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু তিন লাখ টাকা দিতে পারে মুছার পরিবার। তিন লাখ টাকা নিয়েও ওই দিন ভোরে মুছা আকবরকে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাদি পক্ষের আইনজীবি রিদুয়ান আলী বলেন, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়েছেন ওই ঘটনা সংক্রান্ত অন্য মামলা রয়েছে কিনা তা আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে নিহত সাহাব উদ্দীনের মামলা এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল টেকনাফে দুপুরে এসআই দীপক বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সাহাব উদ্দীনকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ক্রসফায়ার না করার কথা বলে তার পরিবার থেকে পাঁচ লাখ টাকা দাবী করে। তার পরিবার ৫০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু আরো ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা না দেয়ায় ২০ এপ্রিল রাতে কাঞ্জরপাড়া ধানক্ষেতে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে সাহাব উদ্দীনকে গুলি হত্যা করা হয়।

এই মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী জানান, ফৌজদারি মামলার এজাহারটি আমলে নিয়ে ওই ঘটনা সংক্রান্ত অন্য কোন মামলা আছে কিনা তা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে টেকনাফ থানার ওসিকে।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Emdad ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
Oci prodep to nej hate Guli kore Onek manus khun korce tar to fashi 100 bar hoa ucit,
Total Reply(0)
Ahmed Saleh ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:২৬ এএম says : 0
জেল গেইটে কেন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করেন না কেন এর কারন কি প্রদীপ কি কোন মন্ত্রী না অন্যকোন কিছু বুঝেআসেনা।
Total Reply(0)
Ujjal Mia ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:২৬ এএম says : 0
প্রদীপ ভালো করেই জানে সে নিজে স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দী না দিলে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে আদালত ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হবে!!!!
Total Reply(0)
Repon Sorkar ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:২৭ এএম says : 0
পুর্নিমার চাঁদ থাকতে প্রদিপ লাগবে কেন?তাই চিরো দিনের জন্য প্রদিপ টা নিবিয়ে দেয়া জায়না??
Total Reply(0)
Moniruzzaman Sikder ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:২৭ এএম says : 0
প্রদীপ কোন খুঁটির জোরে বাংলাদেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জবানবন্দি দিতে অসিকৃতি জানায় ?
Total Reply(0)
Mujahid Chowdhury ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৪:২৮ এএম says : 0
Alhumdulillah
Total Reply(0)
Mohammed Shah Alam Khan ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:২৫ এএম says : 0
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তারা ৬৮ জনের সাথে কথা বলে, এদের সকলের বক্তব্যে ওসি প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার কথা রয়েছে এরা প্রদীপের সেদিনের ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রদীপের সাথে কথা বলেছেন কিন্তু প্রদীপ বাবু কোন জবার দিয়েছে কিনা সেটা পরিষ্কার হয়নি। ওসি প্রদীপ সিনহা হত্যার সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়ে রহস্যজনকভাবে নিরবতা পালন করলেও এই মামলার অন্যান্য ১২ আসামী এবিষয়ে রিমান্ডে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এখন ওসি প্রদীপের এই আচরণে এটাই বুঝায় যে, ওসি প্রদীপ বাবু মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন কাজেই তিনি সাজা পাবার অনুপোযোগী। আর এটা প্রদীপ বাবুকে শিখিয়ে দিয়েছেন তাঁর পাচাটা পয়সার গোলাম উকিল সাহেবেরা। এখন আল্লাহ্‌ই বলতে পারেন এই দুর্ধর্ষ অপরাধীর বিচার কিভাবে হবে......
Total Reply(0)
mashud ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৪৪ এএম says : 0
আর্মি থেকে পুলিশের খুটির জোর বেশি, তার উপর প্রদীপ !!!¿¿¿
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন