শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আগামীকাল মামলার রায়

মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলা

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় আগামীকাল সোমবার। নির্মম এই ঘটনাটি ঘটে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে। সেখানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। দীর্ঘ দেড় বছর পর এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম শেষে ৩১ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে আদালত। মামলার দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় ৮ দফায় ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে ঘোষণা হতে যাচ্ছে এই রায়।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় ২টি এবং রামু থানায় ১টি মামলা দায়ের করেন। সরকারি কাজে বাধা প্রদান এবং মাদক আইনে এই মামলা দুইটি দায়ের হয়। টেকনাফ থানায় দায়ের করা ওই দুই মামলায় নিহত সিনহার সঙ্গী সাইদুল ইসলাম সিফাতকে আসামি করা হয়। এছাড়া রামু থানায় মাদক আইনে দায়ের করা মামলাটিতে আসামি করা হয় নিহত সিনহার অপর সঙ্গী শিপ্রা দেবনাথকে।

২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। মামলার অন্য আসামিরা হল, টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, উপ-পরির্দশক (এসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।

২০২০ সালের ৬ আগস্ট সকালে মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভূক্ত করে তদন্তের জন্য র‌্যাবকে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন বিকালে মামলায় অভিযুক্ত ৯ জনের মধ্যে ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণকারি আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

র‌্যাব মামলার তদন্তকালীন ২০২০ সালের ১১ আগস্ট গ্রেফতার করে পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের মারিশবুনিয়া এলাকার মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আয়াজ ও নিজাম উদ্দিনকে আদালতে সোপর্দ করেন। মামলা তদন্তের এক পর্যায়ে ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট এপিবিএন এর তিন সদস্য সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহজাহান মিয়া, কনস্টেবল মো. রাজীব ও কনস্টেবল মো. আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করে র‌্যাব আদালতে সোপর্দ করে। ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর র‌্যাব কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। কারাগারে থাকা এই ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারি কর্মকর্তা। এদের মধ্যে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর র‌্যাব-১৩ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৪ জন কারাগারে থাকলেও টেকনাফ থানার কনস্টেবল সাগর দেব পলাতক ছিল। অভিযোগপত্রে সাক্ষি করা হয় ৮৩ জনকে। একই দিন পুলিশের দায়ের করা মামলা ৩টির চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব এর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই সাথে পুলিশের দায়ের করা ৩টি মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সাইদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন আদালত।

২০২১ সালের ২৪ জুন পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়। সেই সাথে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৬ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত দিন ধার্য করেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আদালতের বিচার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় ধার্য দিনগুলোতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ দফায় ৮৩ জনের মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সর্বশেষ অষ্টম দফায় ২৯ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনদিনে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়।

এরপর ৬ ও ৭ ডিসেম্বর আসামিরা ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন। সবশেষে ৯ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলায় উভয়পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন। যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে আদালত ৩১ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এছাড়া মেজর সিনহা নিহত হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। গঠিত কমিটি তদন্ত শেষে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। তবে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে কি ধরণের বিষয়বস্তু উল্লেখিত ছিল তা প্রকাশ পায়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Nurmohammad Rumi ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৭ এএম says : 0
এই অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছি।
Total Reply(0)
Rhi MD Yeakub Ali ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৭ এএম says : 0
আইনজিবীরা আসামিকে কীভাবে নির্দোষ দাবি করে। তাহলে কী মেজর সিনহা খুন হয় নি
Total Reply(0)
Md Najmul Huda ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৭ এএম says : 0
এই বিচার রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে অপরাধ করলে শাস্তি পায়।সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করি এবং তা যথাসময়ে বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি(জানি যদিও হবেনা )
Total Reply(0)
Ak Rubel ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৭ এএম says : 0
সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড কামনা করি।এবং তা জনসম্মুক্ষে ।
Total Reply(0)
Salahuddin Babul ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৮ এএম says : 0
প্রদীপের আইনজীবীরা কি ভাবে নির্দোষ দাবি করে । এসব আইনজীবীদের কারনে খুনিরা বেঁচে যায়
Total Reply(0)
Md Shahidul Islam ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৮ এএম says : 0
আইন সবার জন্য সমান বিচারকরা এটা মাথায় রেখে রায় ঘোষণা করবেন
Total Reply(0)
Khandoker Rafiq Mia ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৮ এএম says : 0
আল্লাহ যেন বিচারককে সঠিক বিচার করার তৌফিক দান করেন
Total Reply(0)
তাজউদ্দীন আহমদ ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ৮:১৩ এএম says : 0
অপরাধীদের একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদন্ড
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন