চাঞ্চল্যকর মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যদানকালে ছেনুয়ারা নামের এক নারী সাক্ষী আদালতকে জানিয়েছেন তার স্বামী বাহার ছরার আব্দুল জলিলকে ধরে নিয়ে যায় ওসি প্রদীপ। তাকে খাবার না দিয়ে সাত মাস ধরে উপোষ রেখে তিলে তিলে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এজন্য মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামী টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ দায়ী নলে জানান ছেনুয়ারা।
এসময় আদালতকক্ষে ওসি প্রদীপ সহ মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামিরা হাজির ছিলেন। এক পর্যায়ে ছেনুয়ারা ওসি প্রদীপ কে লক্ষ্য করে উত্তেজিত হয়ে এই কথাগুলো বলতে থাকলে আদালত কক্ষ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সাক্ষ্য প্রদান কালে ছেনুয়ারা আরো বলেন, ওসি প্রদীপ তার স্বামী আব্দুল জলিলকে সাত মাস আগের ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ছেনুয়ারার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকাও নেয়। কিন্তু তার স্বামী আব্দুল জলিলকে খেতে না দিয়ে উপোষ রেখে সাত মাস ধরে তিলে তিলে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মেজর সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) চতুর্থ দফায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কারা ভ্যানে করে প্রদীপ লিয়াকতসহ ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে ২৯ (সেপ্টেম্বর) বুধবার পর্যন্ত। এর আগে তৃতীয় ধাপে সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন সার্জেন্ট আয়ুব আলী, সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ শাহীন আব্দুর রহমান চৌধুরী ও হাফেজ সালেহ আহমদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলাটির রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড.ফরিদুল আলম।
গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা চারদিন দ্বিতীয় দফা ও ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিন তৃতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এর আগে প্রথম দফায় ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট মামলার ১নং সাক্ষী ও বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২নং সাক্ষী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল।
এনিয়ে মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসহ এ মামলায় ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে তিন দফায় আদালতে মোট ১৪ জন সাক্ষ্য দিলেন। তাদের জেরাও শেষ করেছে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।
পিপি ফরিদুল আলম জানান, 'আজ মঙ্গলবার ভিকটিম সাক্ষী তথা ওসি প্রদীপ গংয়ের অত্যাচার-নির্যাতনে যারা ভুক্তভোগী ছিল তাদের জবানবন্দির মাধ্যমে চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন