শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

প্রভাবশালীদের নাম বেরিয়ে আসছে

কক্সবাজারে ২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট

কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৭ এএম

ঘুষের প্রায় ৯৪ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার হওয়া কক্সবাজার এলএ শাখার সার্ভেয়ার ওয়াশিমের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলায় একে একে বেরিয়ে আসছে প্রভাবশালীদের নাম। সার্ভেয়ার ও দালালসহ গ্রেফতার হওয়ার চারজনের দেয়া স্বীকারোক্তি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে বেরিয়ে আসা প্রভাবশালী দালালের তালিকায় রয়েছে রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, ব্যাংক কর্মকর্তা, সাংবাদিকের নামও।
এসব দালালের সাথে জমি ক্ষতিপূরণ দুর্নীতির সম্পৃক্ততা মিলেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের বর্তমান ও সাবেক ৫৭জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম। এ ব্যাপারে তদন্ত সংশ্লিষ্ট দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, মামলার তদন্তের এ পর্যায়ে প্রায় দেড়শ’ দালালের নাম পাওয়া গেছে। গ্রেফতার হওয়া আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে দালালদের নাম প্রকাশ করেছে। এখন যাচাই বাছাই করে অনেকের ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। অনেকের জমি এটাচ (মামলায় সম্পৃক্ত) করা হয়েছে। একই সাথে জেলা প্রশাসনের অনেক অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উঠে এসেছে।
জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি র‌্যাবের অভিযানে ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকাসহ গ্রেফতার হন কক্সবাজার এলএ শাখার সার্ভেয়ার ওয়াশিম খান। ওই ঘটনায় ১০ মার্চ চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে সার্ভেয়ার মো. ওয়াসিম খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
তদন্তে ২২ জুলাই কক্সবাজারের দালাল সেলিম উল্লাহ এবং ৩ আগস্ট দালাল সালাউদ্দিন ও কামরুদ্দিনকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ এলএ মামলার মূল নথি, ঘুষ লেনদেনের হিসাব লেখা রেজিস্ট্রার উদ্ধার করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এসব নথি থেকে সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা এবং লেনদেনের বিষয়টি নিশ্চিত হন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা।
গ্রেফতার হওয়া সার্ভেয়ার ও তিন দালালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
চার আসামি পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ওই স্বীকারোক্তিতে কক্সবাজারে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ লেনদেনে উঠে আসে প্রায় দেড়শ’ দালালের নাম। এসব দালালদের মাধ্যমে কমিশনে জমির ক্ষতিপূরণ ছাড় দিয়েছেন এলএ শাখার কর্মকর্তারা। আসামিদের স্বীকারোক্তিতে ক্ষতিপূরণ লেনদেন কাজে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক ৫৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পৃক্ততার তথ্য বেরিয়ে আসে। তন্মধ্যে ৩০জন সার্ভেয়ার, ৮ জন কানুনগো, ১০ জন অফিস সহকারী, ৩ জন অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, ৫ জন ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)’র নাম।
কক্সবাজার জেলাজুড়ে সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি ২১টি প্রকল্পের জন্য প্রায় ২৮ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। তন্মধ্যে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এলএনজি টার্মিনাল, এসপিএম প্রকল্প, অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক, ট্যুরিজম পার্ক, সাবমেরিন বেস, রেল ট্র্যাকস, শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, পিবিআই কার্যালয়, সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প। এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, কক্সবাজার ভূ-উপরস্থ পানি শোধনাগার স্থাপন প্রকল্পে বন্দোবস্তকৃত সরকারি খাসজমিও অধিগ্রহণ হওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি তদন্তের জন্য এক সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ করছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তদন্তে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম আসলে সেটা তাদের ব্যক্তিগত দায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Amir Hossain Tushar ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৮ এএম says : 0
সব চোরে চোরে খালাতো ভাই।দেশে চুরি ছাড়া কোন কথাই নাই।সব দেশে পায় সোনার খনি আর শেখ মুজিব পেয়েছিলেন চোরের খনি।এরাই হল সেই চোরের বংশধর ।
Total Reply(0)
Imrul Islam Emon ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৮ এএম says : 0
লুটপাটের উৎসব চলছে চান্দু।
Total Reply(0)
MD Belal Hossain Sumon ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৮ এএম says : 0
ভেঙে দেওয়া হোক ওদের সিন্ডিকেট।
Total Reply(0)
Adnan Ameen ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৮ এএম says : 0
সব গুলোই কাউয়া। তোদের রিজেন্টের সাহেদ এর মতোই অবস্থা হবে ইনশা আল্লাহ। তোদের এই সম্পদ তোরা ভোগ করতে পারবি না, উল্টো কবরে ডান্ডার বাড়ী ফ্রি।
Total Reply(0)
Md Shafiul Alam ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৫:১৯ এএম says : 0
আগে পুরো বাংলাদেশে মিলে একটি হাওয়া ভবন ছিল আর এখন প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় হাওয়া ভবন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন