ফেল্পস নয় চ্যালমার্স
অলিম্পিকের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট যেমন ট্রাক এন্ড ফিল্ডে ছেলেদের ১০০ মিটার দৌড়, তেমনি সাঁতারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ছেলেদের ১০০ মিটার ফ্রিস্টইল। পুলের রাজা মাইকেল ফেল্পস এই ইভেন্টে সাঁতরান না। তার অনুপস্থিতিতে পুলে গতির ঝড় তুলে এই ইভেন্টের স্বর্ণ দখলে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাঁতারু কাইল চ্যালমার্স। ৪৭.৫৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে বেলজিয়ামের পিটার টিমার্সকে (৪৭.৮০ সেকেন্ড) পেছনে ফেলেন তিনি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের নাথান অ্যাড্রিয়ান হন তৃতীয়।
৪৮ বছর পর এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতলেন অস্ট্রেলিয় কোন সাঁতারু। অস্ট্রেলিয়া কিংবদন্তি ইয়ান থর্পের পর সবচেয়ে কম বয়সে সাঁতারে স্বর্ণ জয়ের রেকর্ড গড়লেন চ্যালমার্স। সিডনি অলিম্পিকে ১৭ বছর বয়সে স্বর্ণ জিতেছিলেন থর্প, চ্যালমন জিতলেন ১৮ বছর বয়সে। ইতোমধ্যে ৫ অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী থর্পের সাথে তুলনা করা হয় তাকে।
বেলমন্তের ইতিহাস
লন্ডন অলিম্পিকে রৌপ্য পদক জয়ী মিরেইয়া বেলমন্তের রিওতে অংশগ্রহণই ছিল অনিশ্চত। কাঁধের সেই চোটের সেই শঙ্কা কাটিয়ে রিও’র পুলে নেমে গড়লেন ইতিহাস। অলিম্পিকে স্পেনের প্রথম নারী সাঁতারু হিসেবে জিতে নিলেন স্বর্ণ পদক। মেয়েদের ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে ২ মিনিট ৪ দশমিক ৮৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে সবার আগে সাঁতার শেষ করেন তিনি। জয়ের পর ২৫ বছর বয়সী কাতালান রমনী বলেন, ‘আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি ভাবিনি যে সেরে উঠতে পারব। কিন্তু আমি পেরেছি এবং তা সম্ভব্য সবচেয়ে ভালো উপায়ে।’
লেডেকি আছেন না!
নারীদের ৪*১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে তৃতীয় ল্যাপেও এগিয়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাঁতারুরা। শেষ ১০০মিটার ল্যাপে পানিতে ঝাঁপিয়ে সেই হিসাব পাল্টে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাঁতারু কেটি লেডেকি। রিও’র পঞ্চম দিনে সাঁতারে যুক্তরাষ্ট্রকে এনে দিলেন আরো একটি স্বর্ণ। আগের দিন ২০০ মিটার ফ্রিস্টইলে জিতেছিলেন স্বর্ণ। এরও আগে ৪০০ মিটার ফ্রিস্টইলে নিজের গড়া আগের রেকর্ড গুড়িয়ে জিতেছিলেন রিও’র প্রথম সোনালী পদক। এখনো বাকি তার প্রিয় ইভেন্ট ৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইল। লন্ডন অলিম্পিকে এই ইভেন্টে স্বর্ণ জয়ী তারকা এবারো জিততে পারলে ট্রেবল জয়ের বিরল রেকর্ড গড়বেন মাত্র ১৯ বছর বয়সী এই সাঁতারু।
বয়স কোন বাধাই নয়
একদিন পরেই ৪৩তম জন্মদিন। এই বয়সে মেয়েদের সাইক্লিংয়ে স্বর্ণ জয়ের চিন্তাও করতে পারে না কেউ। অথচ সেই কাজটিই করে দেখালেন যুক্তরাষ্ট্রের সাইক্লিস্ট ক্রিস্টিন আর্মস্ট্রং। ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকে সোনা জয়ের পর অবসরও নিয়ে নিয়েছিলেন, কিন্তু ফিরে এসে লন্ডন আলিম্পিকে জেতেন স্বর্ণ। এরপর আবার দেন অবসরের ঘোষণা। কিন্তু রিও অলিম্পিক তাকে আবারো অবসর ভাঙতে বাধ্য করে। ফিরে এসে এবারো হলেন জয়ী। ২৯.৭ কিলোমিটার কোর্স শেষ করেন তিনি ৪৪ মিনিট ২৬.৪২ সেকেন্ড সময়ে। পুরুষ ট্রায়ালে স্বর্ণ জেতেন ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে স্বর্ণজয়ী সুইস কানসেলারা ফাবিয়ান।
আলদিহানির দুঃখ
২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে শ্যূটিংয়ে ফেহাইদ আলদিহানি জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ। হোক না সেটা ব্রোঞ্জ, অলিম্পিক ইতিহাসে এটিই যে প্রিয় দেশ কুয়েতের প্রথম পদক। লন্ডনেও সন্তুষ্ট থাকতে হয় ব্রোঞ্জ নিয়ে। এবার জিতেছেন অধরা সেই স্বর্ণ পদক। কিন্তু আফসোস দেশের হয়ে নয়, অলিম্পিকের পতাকায় খেলেছেন আলদিহানি।
কুয়েতের অলিম্পিক কমিটিতে সরকারী হস্তক্ষেপের কারণে গত বছর দেশটিকে নিষিদ্ধ করে অলিম্পিক কমিটি। এই কারণে অলিম্পিকের পতাকায় প্রতিযোগিতায় নাম লেখান আলদিহানি। তবে এখানেও ইতিহাস গড়েছেন তিনি। অলিম্পিক দলের প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে পুরুষ ডাবল ট্র্যাপ শূটিংয়ে স্বর্ণ জেতেন আলদিহানি।
ওজন কম হওয়াই স্বর্ণ!
চীনের লু জিয়াওজুন এবং কাজাখস্তানের নিজাত রাহিমোভ দু’জনেই ভারোত্তলোনের ৭৭ কেজি ওজনশ্রেণীতে স্ন্যাচ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলে ওজন তোলেন সমান ৩৭৯ কেজি। তাহলে চ্যাম্পিয়ন হবে কে? এমন সমস্যার সমাধান করা হল দুই প্রতিযোগীর শারীরিক ওজন দিয়ে। লুর চেয়ে ওজন কম হওয়ায় স্বর্ণ জিতলেন রাহিমাভ। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে লির গড়া আগের রেকর্ড ভেঙে এবার ২১৪ কেজির নতুন রেকর্ডও গড়েন কাজাখস্তানকে রিও’র প্রথম স্বর্ণ এনে দেয়া রাহিমোভ। কাজাখদের দ্বিতীয় স্বর্ণ এনে দেন সাঁতারু দিমিত্রি বালাদিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন