বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জিপিএ-৫’র উন্মাদনা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ তৈরি করছে : শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০২ এএম

জিপিএ-৫ নিয়ে উন্মাদনা শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের ওপরে সামাজিক-পারিবারিক চাপ তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষাকে আনন্দময় করতে চাই। শিক্ষার্থীর ওপরে অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা সামাজিক চাপও কিন্তু আমাদের আছে। একটা জিপিএ-৫ নিয়ে উন্মাদনা। তা সামাজিক-পারিবারিক চাপ তৈরি করে শিক্ষার্থী-পরিবারের উপরে; সেটি কিন্তু শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এবং সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্যও খুব সুখকর। কাজেই মূল্যায়ন পদ্ধতিটি যেন এই ধরণের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি না করে আমরা সেই বিষয়টিতে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করছি। গতকাল বুধবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান এবং ২০২০-২০২১ বছরের নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু কিছু বড় বড় সমস্যার উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি বড় সমস্যা অতিরিক্ত পরীক্ষা নির্ভরতা। পরীক্ষা মানেই একটা অতিরিক্ত মানসিক চাপ, একটা বোঝা। সেটি শুধু শিক্ষার্থীর জন্য নয়, তাদের অভিভাবকদের জন্য, সবার জন্য, পুরো সিস্টেমের জন্য। তার সঙ্গে একটা সনদ সর্বস্ব ব্যাপার আছে- একটা সার্টিফিকেট পেতে হবে। কিন্তু সেই সার্টিফিকেটের সঙ্গে, একটা কাগজের সঙ্গে আর কি পাচ্ছি? কি দক্ষতা যোগ্যতা পাচ্ছি কিনা?
তিনি বলেন, শিক্ষাটা কেমন যেন নিরানন্দ ব্যাপার হয়ে গেছে। মনে হয় শিক্ষা মানেই একটা খুব কঠিন ব্যাপার। সারাদিন শিক্ষার্থী পড়ছে, তারপরে গৃহশিক্ষক, কোচিং সেন্টার, পরীক্ষার চাপ। তাহলে খেলাধুলা, সংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশ নেয়া, পারিবারিক পরিসরে আনন্দময় পরিবেশ কোথায়? সবগুলোই কিন্তু লাগবে একজন ভারসম্যপূর্ণ মানুষ হিসেবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের জ্ঞানার্জনের উৎস শুধুমাত্র যেন বই না হয়, বই আমাদের শুধু সহযোগিতা করবে। এর বাইরে অনেক কিছু পড়ে শেখা, অ্যাকটিভিটি বেইজড সেটি খুব জরুরি। বাস্তবতার সাথে দেখে শেখা, বাস্তবের সাথে সম্পৃক্ততা বেশি হয়।
তিনি বলেন, করোনাকালে অনলাইন এডুকেশন শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে, করোনা পরবর্তীতেও আমাদের অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম অংশ থাকবে। এর থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর কোনো সরকারই সেভাবে শিক্ষায় গুরুত্ব দেননি। গত কয়েক বছরে শিক্ষার যে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে তা তারই কন্যার কারণে।
অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইরাবের বিদায়ী সভাপতি মুসতাক আহমেদ। অভিষেক অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন ইরাবের নব নির্বাচিত সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর সৈয়দ গোলাম ফারুক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, জুরি বোর্ডের দুই সদস্য প্রথম আলোর শরিফুজ্জামান পিন্টু ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইব্রাহিম বিন হারুন। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইরাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম সুমন।

জুরি বোর্ডের বিচারে এ বছর তিনজন ইবার বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পুরস্কৃত লাভ করেন। তারা হলেন- কালের কণ্ঠের শরিফুল আলম সুমন, ডেইলি সানের সোলায়মান সালমান এবং বণিক বার্তার সাইফ সুজন।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি, ইউজিসিসহ শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবন্দ অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন