ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাত্র ১২ বছরের মধ্যে ভঙ্গুর ও কালো তালিকাভুক্ত একটি দেশে নতুন আস্থা, নতুন আশার সঞ্চার করেছেন। গতকাল নগর ভবনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে করপোরেশনের কর কর্মকর্তা ও সহকারী কর কর্মকর্তাদের ই-রেভিনিউ এবং ই-ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
এ সময় ডিএসএসসি মেয়র বলেন, সিঙ্গাপুরের জাতির পিতা লি কন ইউ অবকাঠামোগত উন্নয়নকে দু ভাগে ভাগ করেছিলেন। একটি হলো, হার্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট, আরেকটি হলো সফট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট। বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন এসব হলো হার্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট। আর এই হার্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার পরিচালনার জন্য যে মেধা, যে সক্ষমতা, প্রশিক্ষণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন দরকার সেটাই হলো সফট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট। সুতরাং সবকিছুর চালিকাশক্তিই হলো মানবসম্পদ উন্নয়ন।
দেশে বর্তমানে মানবসম্পদের উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১২ বছর আগেও আমাদের মেধাবী ছেলেমেয়েরা সবাই বিদেশে পাড়ি দিতো। তারা মনে করতো, এ দেশে কাজ করার সুযোগ নেই। কিন্তু এখন মেধাবী ছেলে-মেয়েরা দেশে ফিরে আসছে। তারা এখন পড়াশোনা শেষ করে মনে করছে, আমিও আমার দেশের জন্য কিছু করতে পারবো। আমারও সুযোগ হবে দেশের জন্য কিছু করার এবং তারা দেশে ফিরে আসছে। এটাই হলো সফট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট। কারণ, আমরা আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পেরেছি এবং সে অনুযায়ী বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ হয়েছে।
এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর কর্মকর্তাদের সক্ষমতা আরেকটি ধাপে এগিয়ে যাওয়া উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র আরও বলেন, যারা এই অনলাইন সিস্টেম ডেভেলপ করেছে তারাও আমাদের সক্ষমতা না থাকায় এই সিস্টেম আমাদের কাছে হস্তান্তর করতে পারছিল না। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা নিজেরাই ঢাকাবাসীর কাছে অনলাইনে ই- রেভিনিউ ও ই-ট্রেড লাইসেন্স সুবিধা পৌঁছে দেবো। এর আগে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস করপোরেশনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সিস্টেম অ্যানালিস্ট আবু তৈয়ব মো. রোকন উদ্দিনের সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) শরীফ আহমেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলামসহ বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্যামপুর খালের সীমানা নির্ধারণ ও উচ্ছেদ
শ্যামপুর খালের সীমানা নির্ধারণ এবং উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃকর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান গতকাল শ্যামপুর খালের সীমানা নির্ধারণ এবং সীমানার মধ্যে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেন। অভিযানকালে তিনি আটটি অস্থায়ী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন এবং বিশটি স্থায়ী স্থাপনা চিহ্নিত করেন যা পরবর্তীতে উচ্ছেদ করা হবে।
সীমানা নির্ধারণ ও উচ্ছেদ প্রসঙ্গে ডিএসএসসি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, শ্যামপুর খালটির অধিকাংশই বেদখল হয়ে যাওয়ার কারণে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এই খালের সীমানা নির্ধারণ এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
শ্যামপুর খালের সীমানা নির্ধারণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রসঙ্গে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মোঃ বদরুল আমিন বলেন, ডিএসসিসির মেয়র মহোদয় খাল ও জলাশয় পুনরুদ্ধারের জন্য যে প্রকল্প গ্রহণ করছেন, সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদেরকে শ্যামপুর, জিরানী, মান্ডা ও কালু নগর খালে পরিষ্কার-পরিছন্নতা এবং বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করতে বলেছেন। সেই আলোকে আমরা শ্যামপুর খালে গত ৬ নভেম্বর হতে বর্জ্য অপসারণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেখানে সীমানা নির্ধারণ, উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সীমানা নির্ধারণ, উচ্ছেদ এবং বর্জ্য অপসারণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন