গত একমাসে কক্সবাজারে ৩টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। ১টি কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জে। অপর ২টি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের রামু উপজেলায়। গতকাল কক্সবাজারের রামুতে আরো একটি গুলিবিদ্ধ বন্যহাতির সন্ধান পেয়েছে বনবিভাগ। গুলিবিদ্ধ ওই হাতি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। হাতিটিকে বাঁচাতে চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখেছে ভেটেনারী সার্জন।
জানা গেছে, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালার গহীন বনে রোববার গুলিবিদ্ধ হাতির খবর স্থানীয় বনবিভাগ। এরপর থেকে ওই হাতিকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক। উত্তর বনবিভাগের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কারা গুলি করেছে সেটি এখনো জানা যায়নি। হাতিটি বর্তমানে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। গত রোববার বিকালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সোমবারও সকাল থেকে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চিকিৎসক এবং বনবিভাগের একটি টিম হাতিটিকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গুলিবিদ্ধ হাতিকে চিকিৎসা দিচ্ছেন রামু উপজেলা ভেটেনারী সার্জন ডা. জুলকার নাইম। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এদিকে, একই দিন রামু দক্ষিণ মিঠাছড়ির ৪ নং ওয়ার্ডের আওতাধীন খরলিয়া ছড়ার শাইরার ঘোনা এলাকায় বনের পাশে মৃত পড়ে থাকা অবস্থায় একটি মৃত বন্য হাতি উদ্ধার করে বনবিভাগ। পরে রাতে রামু উপজেলা ভেটেনারী সার্জন ডা. জুলকার নাইম ময়নাতদন্ত করে হাতিটির মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করেন।
ভেটেনারী সার্জনের উদ্বৃতি দিয়ে বনবিভাগের দাবি, হাতিটিকে মারার জন্য ফাঁদ পাতা হয়েছিল। বৈদ্যুতিক শক লাগিয়ে হাতিকে হত্যা করা হয়। হাতির বাম পাশের একটি পায়ে গুলির চিহ্নও পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, শাইরার ঘোনা নামক এলাকায় নুরুল হক নামের এক ব্যক্তি প্রায় ১০০ ফুট বৈদ্যুতিক তার চালিয়ে বনাঞ্চলে অবস্থিত তার প্রজেক্টে বিদ্যুৎ নিয়ে যায়। ওই জায়গায় দিয়ে প্রায় সময় হাতির চলাচল করে। প্রায় সময় রাতের বেলায় লোকালয়ের কাছাকাছি এসে ধানক্ষেতসহ বিভিন্ন ক্ষেত খেয়ে ফেলে এবং নষ্ট করে বন্যহাতি।
দক্ষিণ বনবিভাগের পানেরছড়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হাতিকে হত্যা করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক শকের পাশাপাশি গুলিও করা হয়েছে। বাম পাশের একটি পায়ে গুলির আঘাত পাওয়া গেছে। সেখান থেকে রক্ত বের হয়। ময়নাতদন্তের পর হাতিটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে নুরুল হক নামে একজনকে আসামি করে অস্ত্র ও বন্যপ্রাণি হত্যার অপরাধে রামু থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা ইশরাত ফাতেমা বলেন, বৈদ্যুতিক শক ও গুলি করে হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন