উত্তর : সীরাত আরবি শব্দ। এর অর্থ নিয়মাবলী, জীবনযাপন পদ্ধতি, আচার ব্যবহার, জীবনচরিত ইত্যাদি। সাধারণ অর্থে প্রিয়নবী (সা.)-এর আচার-আচরণ, জীবনযাপন প্রণালী তথা জীবনচরিতকে বোঝায়। মহানবী (সা.)-এর মূল সীরাত হলো, তার বিশাল হাদিস ভান্ডার। তবে প্রাথমিক যুগের মনীষীদের মতে রাসূল (সা.)-এর সরাসরি অংশগ্রণ করা যুদ্ধসমূহ এবং মহানবীর প্রেরিত যুদ্ধাভিযানসমূহের সমষ্টিকে সীরাত বলে। তাদের মতে সীরাত হলো- সীরাত, আদব, তাফসীর, আকাইদ ইত্যাদি আটটি বিদ্যার সমষ্টির নাম। সে হিসেবে সীরাত ইলমে হাদিসের একটি অংশ। তবে এখনকার সময়ের পন্ডিত মনীষীরা সীরাত বলতে মহানবী (সা.)-এর পূর্ণাঙ্গ জীবনচরিতকে আখ্যায়িত করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সা. এর সামগ্রিক জীবন কিংবা তাঁর বর্ণিল ও বর্ণাঢ্য জীবনের আদর্শ ও চেতনাগত কোন দিক নিয়ে যে চিন্তা ও গবেষণা করা হয় তা-ই সীরাত। এ জন্য হাদীস, মাগাযি, শামায়েল, রাসূল প্রশান্তি মূলক কাব্য সীরাতের অন্তভর্‚ক্ত।
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিখ্যাত জীবনী গ্রন্থগুলোর নামের সঙ্গে এই সিরাত শব্দটি সম্পৃক্ত দেখা যায়। যেমন- সিরাতে ইবনে ইসহাক, সিরাতে ইবনে হিশাম, সিরাতে হালবিয়া, সিরাতে রাসূল, সিরাতে মুগলতাই, সিরাতে খাতিমুল আম্বিয়া, সিরাতে সারওয়ারে আলম, সিরাতে মুহাম্মদিয়া, সিরাতে মোবারক মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.), সিরাতে মুহসিনে কায়েনাত (সা.), সিরাতুন্নবী ও সিরাতে মোস্তফা প্রভৃতি।
সিরাত চর্চায় সাধারণত কুরআনে কারিম, হাদিস, মাগাজি গ্রন্থfবলী, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিবেদিত কবিতা, প্রাচীন ইতিহাসমূলক ( যেসব মক্কা-মদিনার ইতিহাস), সাহাবিদের শামায়েল প্রভৃতি সহায়ক হিসেবে বিবেচিত।
ইসলামের পঞ্চম খলিফা হিসেবে খ্যাত হজরত ওমর ইবন আবুদল আজিজের পরামর্শক্রমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পঁচাশি বছর পর ইমাম শিহাব আল যুহরি (জ. ৫১ হি. মৃত-১২৪ হি.) সিরাত চর্চা শুরু করেন। তিনি যে সংক্ষিপ্ত জীবনীটি রচনা করেন সেটিই সীরাত বিষয়ক প্রথম গ্রন্থ।
উত্তর দিচ্ছেন : এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন