বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২২ লাখ টাকা জরিমানা

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২০, ১১:৩৮ এএম

 

বিকেল সাড়ে পাঁচটায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ভ্রাম্যমাণ আদালত কুষ্টিয়া শহরের কলেজ মোড়ে বৈশাখী ক্লিনিকের সামনে গিয়ে দাঁড়াল। গাড়ি থেকে র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী হাকিম ও আইন কর্মকর্তা গাউছুল আজম উঠে গেলেন ক্লিনিকের দোতলায়। সেখানে কয়েকটি কক্ষ ঘুরে দেখে ক্লিনিকের মালিকের সঙ্গে কথা বললেন। কত বেডের অনুমোদন নেওয়া তা জানতে চাইলেন আদালত। জবাবে মালিক জানালেন ২০ বেড। আর র‌্যাবের সদস্যরা পুরো ভবনের কক্ষগুলো ঘুরে পেলেন ৫০ বেড। এসব বেডের অধিকাংশতেই রোগী রয়েছে। বেশির ভাগই অস্ত্রোপচারের রোগী।

২০ বেডের এই ক্লিনিকে নিয়ম অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ছয়জন এমবিবিএস চিকিৎসক থাকার কথা। সেখানে একজনকেও পেলেন না নির্বাহী হাকিম। অথচ এই ক্লিনিকে রয়েছে তিনটি অস্ত্রোপচার কক্ষ। সেখানে দায়িত্বে আছেন একজন এসএসসি পাশ তরুণ। তার কোনো ডিপ্লোমা কোর্সও করা নেই।

ক্লিনিকের এমন চিত্র দেখে হতবাক হলেন নির্বাহী হাকিম গাউছুল আজম। তিনি ঢাকা র‌্যাবের সদর দপ্তর থেকে কুষ্টিয়ায় এসেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ক্লিনিকের মালিককে দুই লাখ ও ওটি ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা তরুণকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি।

র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর রবিউল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত শহরের ছয়টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক ও হাসপাতালে এ অভিযান চালানো হয়।

এর আগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের ক্লিনিকগুলোতে অভিযান চালান র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে শহরের মজমপুর এলাকায় একতা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালকে তিন লাখ টাকা, শাওন ক্লিনিককে ৩লাখ টাকা, পেয়ারাতলা এলাকায় নিউ সান ক্লিনিককে ৪ লাখ টাকা এবং অর্থোপেডিক জেনারেল হাসপাতালকে ৪ লাখ টাকা ও আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিককে ৫লাখ টাকা জরিমানা ও এক কর্মচারীকে তিন মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত।

র‌্যাবের নির্বাহী হাকিম গাউছুল আজম বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যতগুলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়া হয়েছে তাদের একটাতেও এক্স-রে করার জন্য আণবিক শক্তি কমিশন থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এটা খুবই ভয়াবহ চিত্র। তা ছাড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যানেসথেসিয়ার ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতালে এমবিবিএস চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, শুধু জরিমানা নয় নিয়মিত তদারকি করা খুবই জরুরি। কেননা রাতের বেলায় যদি কোনো রোগীর সমস্যা হয় সে ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসক না পাওয়া গেলে সেই রোগীর কী হবে। এর সঙ্গে জনগণের জীবনমরণ জড়িত। এসব হাসপাতালের মালিকদের নিয়মিত তদারকি করা দরকার।

মেডিকেল অফিসার শারমিন আলী বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যানেসথেসিয়ার ওষুধ পুশ করলে রোগীর বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে। এতে অঙ্গহানিও ঘটতে পারে।

অভিযানে র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কমান্ডার রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার শারমিন আলীসহ বিপুলসংখ্যক র‌্যাব সদস্য রয়েছেন।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন